ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ২৮৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ই সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনস) মো. এনামুল হকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পিপি শামসুজ্জামান দিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্য যাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— আমেরিকা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. রাব্বি আলম, জয়বাংলা ব্রিগেডের সদস্য কবিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এলাহী নেওয়াজ মাছুম, জাকির হোসেন জিকু, প্রফেসর তাহেরুজ্জামান, একেএম আক্তারুজ্জামান, আওয়ামী লীগ নেতা সাবিনা ইয়াসমিন, আজিদা পারভীন পাখি, শাহীন, অ্যাডভোকেট এএফএম দিদারুল ইসলাম, মাকসুদুর রহমান, সাবেক এমপি সৈয়দ রুবিনা আক্তার, সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথ, লায়লা বানু, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, রিতু আক্তার, নুরুন্নবী নিবির, সাবিনা বেগম ও শরিফুল ইসলাম রমজান।
এর আগে, গত ১৪ই আগস্ট ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওইদিন তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করে শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার এই মামলায় অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে জানান। প্রতিবেদনে বলা হয়, জয় বাংলা ব্রিগেডের জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন জয় বাংলা ব্রিগেডের জুম মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার অংশ নিয়েছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীদের কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ প্ল্যাটফর্মটিতে সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করতে না দেওয়ার আলোচনা হয়। মিটিংয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করতে গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয় যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান।
এর আগে, ২০২৫ সালের ২৭শে মার্চ শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একই আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক। এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে ২৮৬ জনকে আসামি করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ১৯শে ডিসেম্বর ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’—এর জুম মিটিংয়ে শেখ হাসিনাসহ অনেকে অংশ নেন। এ সময় শেখ হাসিনা তাঁর নেতা-কর্মীদের কাছে দেশবিরোধী বক্তব্য দেন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উৎখাতের নির্দেশ দেন। এ বক্তব্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন