ছবি - সংগৃহীত
পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলা হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে উঠেছে। গত ১৯শে সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে প্রথম পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সে ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী রাঙামাটি জেলাতেও। দুই জেলায় দফায় দফায় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত এবং শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের জেরে দুই পার্বত্য জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
ঘটনার সূত্রপাত, ১৮ই সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল জনতার পিটুনিতে মো. মামুন নামে একজন বাঙালি নিহত হন। পরবর্তীতে সদর থানা পুলিশ নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন ১৯শে সেপ্টেম্বর বিকালে দীঘিনালা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ জনতা বোয়ালখালী বাজারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। শতাধিক দোকান ভস্মীভূত হয়ে যায়।
ঘটনার পর থেকেই ছড়াতে থাকে গুজব। সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে আতঙ্ক ও উত্তেজনা। ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমগুলো গুজবে সয়লাব হয়ে যায়। যার ফলে ক্রমেই সহিংসতা বাড়তে থাকে। উস্কানিমূলক পোস্ট ও ভুয়া ছবি দিয়ে এলাকাবাসীকে উত্তেজিত করা হয়। যার কারণে উত্তেজিত তরুণরা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয় এবং সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে।
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির সহিংস ঘটনায় পাহাড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গুজবের কারণে ভয়ভীতিতে আছেন সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসারের টহল জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টাসহ তিনজন উপদেষ্টা এবং সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তারা জেলা দুটি পরিদর্শন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘটনার নেপথ্যে কারা আছে, সরকারকে তা খুঁজে বের করতে হবে। দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে। জনমনে আতঙ্ক দূর করে অতিসত্বর শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
আই.কে.জে/