ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি হালিম উদ্দিন আকন্দ নামের এক ব্যক্তির চুল জোর করে কেটে দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। প্রায় চার মাস আগের এ ঘটনায় আজ শনিবার (২৭শে আগস্ট) বিকেলে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানায় একটি মামলা হয়েছে।
চুল কেটে দেওয়া ব্যক্তিসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ১২ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন ভুক্তভোগী হালিম উদ্দিনের ছেলে মো. শহিদ মিয়া আকন্দ।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘যারা চুল কেটেছিল, তারা মূলত কনটেন্ট ক্রিয়েটর। থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়ে এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বাউল ফকিরের মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে ধরে তিনজন লোককে জোর করে চুল কেটে দিতে দেখা যায়। বয়স্ক মানুষটি অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে না পেরে বলেন, ‘আল্লাহ, তুই দেহিস।’ হেনস্তার শিকার ওই ব্যক্তির নাম হালিম উদ্দিন আকন্দ (৭০)। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে হালিম ফকির হিসেবেই চেনেন।
স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে মাথায় জট ছিল হালিম ফকিরের। হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.)-এর ভক্ত তিনি। আগে পেশায় কৃষক থাকলেও এখন ফকিরি হালে আছেন। গত কোরবানির ঈদের কয়েক দিন আগে উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজারে হঠাৎ করে একদল লোক এসে তার মাথার জট, দাড়ি ও চুল জোর করে কেটে দেন। ঘটনার সময় বাধা দিতে গেলে তিনি শারীরিক নির্যাতন ও বলপ্রয়োগের শিকার হন। এ ঘটনার পর থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন হালিম ফকির।
‘হিউম্যান সার্ভিস বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন ওই চুল কাটার কাজটি করেছিল। সংগঠনের সদস্যরা ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে এসে ওই কাজ করেন। সংগঠনটির প্রধান ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গামারীতলা গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন আশরাফীসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে মামলার আবেদন করা হয়। পুলিশ বিকেলেই আবেদনটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।
মামলার বাদী শহিদ মিয়া আকন্দ স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বাবার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, আমরা আগে কিছুই করতে পারিনি। দেশের অনেক মানুষ যেহেতু এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন, আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, আইন তাদের বিচার করুক।’
খবরটি শেয়ার করুন