মঙ্গলবার, ২২শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় আজ রাষ্ট্রীয় শোক *** সংসদে সংরক্ষিত আসন চায় দলিত সম্প্রদায় *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির শোক *** সাগরিকার হ্যাটট্রিকে নেপালকে উড়িয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক *** হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভিড় না করার অনুরোধ প্রধান উপদেষ্টার *** নিরীহদের হয়রানি না করতে অনুরোধ গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির *** পাইলট বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর *** বিসিবির সিদ্ধান্ত বদল, স্টেডিয়ামে খাবার নিয়ে ঢুকতে মানা *** বিমান দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বাঁচলেন অভিনেত্রী সানা

শুধু কী দ্রুজদের রক্ষায় সিরিয়ায় হামলা করছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:৩২ অপরাহ্ন, ১৮ই জুলাই ২০২৫

#

ইসরায়েলের দ্রুজ দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত বুধবার (১৬ই জুলাই)  বিকেলে তার দেশের দ্রুজ সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তা দেন। সেখানে অনুরোধ করেন, তারা যেন সুয়েইদায় স্থানীয় বেদুইন ও সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুজ মিলিশিয়াদের লড়াইয়ে অংশ নিতে সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ না করেন। খবর আল জাজিরার।

কিন্তু নেতানিয়াহু যখন এ বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন তার নিজের বাহিনী সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বোমাবর্ষণ করছিল, হামলা চালাচ্ছিল দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। আর এ হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। নেতানিয়াহুর দাবি, দ্রুজদের রক্ষায় ইসরায়েল সামরিক শক্তি প্রয়োগ করেছে।

২০১৮ সালের জাতিরাষ্ট্র আইনের প্রধান রূপকার বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ আইন ইসরায়েলে দ্রুজসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত করে। সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর গত ডিসেম্বরে দেশটিতে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে। তারা সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু ইসরায়েল সীমান্তের কাছে সিরীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বারংবার হুমকি তাদের এ প্রচেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমার ভাইয়েরা, ইসরায়েলের দ্রুজ নাগরিকরা, সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুয়েইদার পরিস্থিতি খুবই গুরুতর।’ তিনি সিরিয়া সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে দ্রুজদের আশ্বস্ত করেন, ‘আমরা আমাদের দ্রুজ ভাইদের রক্ষায় এবং সিরিয়ার শাসক দলগুলো নির্মূলে কাজ করছি।’

সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর গত ডিসেম্বরে দেশটিতে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে। তারা সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে সিরীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বারংবার হুমকি তাদের এ প্রচেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিরিয়ায় দ্রুজ সম্প্রদায়ের আনুমানিক সাত লাখ মানুষের বসবাস। অন্যদিকে, ইসরায়েলে তাদের সংখ্যা দেড় লাখ। ইসরায়েলি দ্রুজদের অনেকেই মনে করেন, ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সময় ১৯৪৮ সাল থেকে তাদের সঙ্গে ইহুদিদের একধরনের ‘রক্তের বন্ধন’ তৈরি হয়েছে। তবে ২০১৮ সালের জাতিরাষ্ট্র আইনের পর এ ভাবনায় ছেদ পড়েছে। এখন অনেক দ্রুজ মনে করেন, তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। তবে এখনো বেশিরভাগ দ্রুজ ইসরায়েলি রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত ও সেনাবাহিনীতেও নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন।

ইসরায়েলের শীর্ষ বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক এই হামলাগুলো সম্ভবত পুরোপুরি দ্রুজদের রক্ষার উদ্দেশ্যে নয়; বরং এর পেছনে ইসরায়েলি সরকার ও সংকটে থাকা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই বেশি রয়েছে।

কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এবং দ্রুজ স্টাডিজ জার্নালের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক রামি জিদান বলেন, ইসরায়েলি দ্রুজরা নিজেদের একই সঙ্গে দ্রুজ, ইসরায়েলি ও আরব বলে মনে করেন। তারা মনে করেন, ইহুদি ও দ্রুজ—উভয়ই সংখ্যালঘু হিসেবে নিপীড়নের শিকার। এ ঐতিহাসিক উপলব্ধি তাদের ইসরায়েলের প্রতি আনুগত্যের ভিত্তি তৈরি করেছে।

রামি জিদানের মতে, এখন এ সম্পর্কের ভিত্তিতেই ইসরায়েলি দ্রুজরা চাইছেন, ইসরায়েল যেন সিরিয়ায় তাদের সম্প্রদায়ের লোকজনকে রক্ষা করে। যদিও সিরীয় দ্রুজরা ঐতিহ্যগতভাবে ইসরায়েলবিরোধী। কিন্তু তাদের কিছু নেতা সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছেন।

ইসরায়েল দ্রুজ সম্প্রদায়

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন