ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চলমান কাতার সফরে দেশটির কাছে বিদ্যমান দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় আরও ১০ থেকে ১২টি এলএনজি কার্গো সরবরাহের অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ।
পাশাপাশি মাতারবাড়িতে ১ হাজার এমএমসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল এবং একটি তেল শোধনাগার স্থাপনে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হবে দেশটির কাছে।
এ উদ্দেশ্যে আজ মঙ্গলবার (২২শে এপ্রিল) ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’- এর সাইডলাইনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ শেরিদা আল-কাবিরর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সাদ শেরিদা কাতার এনার্জির ডেপুটি চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কাতারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আগামীকালের মধ্যে এলএনজি আমদানি বাবদ ৩৭ মিলিয়ন ডলারের পুরো বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নিচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম কাতার থেকে মঙ্গলবার বাসসকে জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে কাতার থেকে আমদানিকৃত এলএনজির দেনার বড় অংশ পরিশোধ করেছে। কাতার থেকে এলএনজি আমদানির ৩৭ মিলিয়ন ডলার এখনো পরিশোধ করা হয়নি। তা আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে পরিশোধ করবে সরকার।’
বাংলাদেশ বর্তমানে কাতারের সঙ্গে দুটি দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি করছে। প্রথম চুক্তির আওতায় প্রতিবছর ৪০ কার্গো এলএনজি পাওয়া যাচ্ছে।
দ্বিতীয় চুক্তির কার্যকারিতা শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে; যার আওতায় প্রতিবছর ২৪ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করা হবে। প্রতিটির পরিমাণ ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ।
কাতার সফরে বাংলাদেশের প্রত্যাশা সম্পর্কে জ্বালানি সচিব সাইফুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে আজ বলেন, ‘আমাদের উপদেষ্টা (ফাওজুল কবির খান) আজ কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে আমরা প্রথম দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় আরও ১০ থেকে ১২টি এলএনজি কার্গো সরবরাহের অনুরোধ জানাব।’
সচিব আরও জানান, ‘আমরা কাতারের কাছে মাতারবাড়িতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল ও একটি তেল শোধনাগার নির্মাণে বিনিয়োগেরও অনুরোধ জানাচ্ছি।’
২০১৭ সালে কাতার এনার্জি এলএনজি (আগের নাম কাতারগ্যাস)-এর সঙ্গে প্রথম চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। ১৫ বছরের এ চুক্তি অনুযায়ী, তারা বছরে ১.৮ থেকে ২.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ করবে, যেখানে প্রতি এমএমবিটিইউতে মূল্য ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ১১৪ ডলার।
২০২৩ সালে দ্বিতীয় চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি’র সঙ্গে। এর আওতায় ১৫ বছর মেয়াদে প্রতিবছর ১.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ করা হবে, যার দাম নির্ধারিত হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডলার প্রতি এমএমবিটিইউ।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাতারে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অর্থনীতি ও জ্বালানি খাতে মধ্যপ্রাচ্যের ধনাঢ্য দেশটির সঙ্গে সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জ্বালানি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করাই এ সফরের মূল উদ্দেশ্য।’
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন