বৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাশ্মিরি ইনশা কাজীর স্বপ্নের চিজ কটেজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:০৩ অপরাহ্ন, ৩০শে মে ২০২৩

#

প্রকৌশলী ইনশা কাজী ও তার স্বপ্নের কটেজ

‘চিজ কটেজ’- ভবনের নামটি যেমন সুন্দর তেমনই সুন্দর ভবনটিও। এখানে আসা প্রত্যেক অতিথি দারুণ অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেরত যান। সুন্দর, মার্জিত গৃহসজ্জার সরঞ্জামে পরিপূর্ণ এই চিজ কটেজকে দেখলে যে কেউ একে রূপকথার কোনও মহলই ভেবে বসবে। এই দোতলা ভবনের চমৎকার শিল্পকর্মের পেছনে রয়েছেন ইনশা কাজী, যার শিল্পকর্মে তার জন্মভূমির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায়।

৩২ বছর বয়সী সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, ইনশা কাজী যুক্তরাজ্য থেকে মার্কেটিং ডিগ্রি অর্জন করে ২০১৫ সালে কাশ্মিরে ফিরে আসেন। নিজের শহরের তরুণদের অনুপ্রাণিত করতে তিনি শুরু করেন কাশ্মিরের প্রথম ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের স্কুল। ২০১৬ সাল থেকে এসএসএমডি স্কুল অফ ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন বিভিন্ন ব্যাচে তরুণদের ফ্যাশন ডিজাইনিং এবং গৃহসজ্জার কাজে দক্ষ করে তুলছে।

তিনি তার কাজের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করেন কাশ্মিরের যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। কাশ্মিরের তরুণদের মধ্যে সৃজনশীলতা রয়েছে। তিনি তাদের সেই সৃজনশীলতা প্রকাশের একটি ক্ষেত্র তৈরি করতে চেয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চিজ কটেজেরও নির্মাণ।

২০০০ সালে, ইনশার বাবা-মা কাশ্মিরের তাংমার্গে ১৯৪৩ সালের একটি এস্টেট জমি ক্রয়ের কথা ভাবেন। কথিত আছে, জমিটি জম্মু ও কাশ্মিরের শেষ রাজা হরি সিংয়ের, যা এতদিন রাজপরিবারের হেফাজতে ছিল। তারা এই জমি ক্রয় করে সেখানে বাগান করেন।

ইনশা কাশ্মিরে ফিরে এসে এই জমিতে স্থানীয় সম্পদ ও দক্ষতা ব্যবহার করে পনির কারখানা নির্মাণের চিন্তাভাবনা করেন। এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পনির কারখানা উভয়ই পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে বলে তিনি চিন্তা করেন।

২০২০ সালে এ জমিতে পনির কারখানার কাজ শুরু হয় এবং তারা সেখানে বিভিন্ন ধরনের পনির তৈরি করেন। কিন্তু এক মাস পরেই কোভিড লকডাউনের কারণে তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

তবে এক দরজা বন্ধ হলে অপর দরজা নিশ্চয়ই খুলে যায়। কারখানার কাজ বন্ধের পর ইনশা চিন্তা করতে থাকেন কি করে তিনি অন্য একটি কাজ করতে পারেন। সেখান থেকেই তার চিজ কটেজ নির্মাণের চিন্তা মাথায় আসে।

চিজ কটেজ কাশ্মিরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ পরিবেশে নির্মিত ভবন। এখানে এসে যে কেউ শান্তির জায়গা খুঁজে পাবেন। তবে এই কটেজ নির্মাণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো কটেজ নির্মাণের ক্ষেত্রে ইনশা তার শিল্পকর্ম ও শিল্পের প্রতি ভালোবাসাকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন।

স্থানীয় উপাদানগুলোর মাধ্যমেই নিজের স্থাপত্যশৈলীর বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে অসাধারণ এক ভবনের নির্মাণ করেছেন ইনশা। কটেজের নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ সবকিছুই করেছে স্থানীয় লোকেরা।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, চিজ কটেজ নির্মাণের কাজ শেষ হলে এটি ইনশার স্বপ্ন থেকে অনেক পর্যটকদের স্বপ্নের জায়গায় পরিণত হয়। এখানে দুটি বিলাসবহুল রুম এবং দুটি স্ট্যান্ডার্ড রুম রয়েছে। তাছাড়া বাড়ির সর্বত্র ইনশার রুচিশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। কাশ্মির ও ইউরোপের স্থানীয় বাজার থেকে তিনি গৃহসজ্জার বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছেন। 

গৃহসজ্জার সরঞ্জামের মাধ্যমেই নয়, অতিথিরা এখানকার স্থানীয় খাবার দাবারেও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এখানকার রান্নার জন্য সমস্ত সবজি ও অন্যান্য সব উপাদান বাগান থেকেই আসে। মাত্র ২৫,০০০ টাকায় একজন এই সবকিছু উপভোগ করতে পারেন।

আই. কে. জে/

Important Urgent

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন