শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাদামের সঙ্গে কাউন চাষে সফল দিনাজপুরের রেজা

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:০০ অপরাহ্ন, ১৯শে জুন ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার পল্লীতে চাষি রেজানুল ইসলাম রেজা  বাদামের সাথে একই জমিতে কাউন চাষে সফলতা অর্জন করেছেন।  সফল উদ্যোক্তা রেজা বলেন, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে এক সময় প্রচুর কাউন চাষ হতো। আবার এক সময় গরীবের গ্রীষ্মকালীন অভাবের সময় খাদ্যও ছিল এ কাউন। দিনের পর দিন মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তনের পাশাপাশি মানুষের অবস্থার উন্নতি ও পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে এখন আর সেভাবে এসব অঞ্চলে কাউন চাষ হয় না।

কালের পরিক্রমায় কাউন চাষ হারিয়ে গেলেও, এবার আধুনিক কৃষি তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উঁচু জমিতে বাদামের সাথে কাউন চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়নের মুরারিপুর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মো. রেজানুর ইসলাম রেজা।

রেজা বলেন,  ইউটিউব ও বিভিন্ন জার্নালের কলাম পড়ে, স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এ ফসল চাষের দিকে ঝুঁকছেন তিনি। প্রথমবারের মতো  সাড়ে ৩ একর উঁচু জমিতে বাদাম চাষ করছেন। এর মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে দেড় একর জমিতে বাদামের সাথে কাউন চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি খাতকে স্মার্ট কৃষি হিসেবে গড়ে তুলতে চান। সরকারের এ উদ্যোগকে কাজে লাগিয়ে ইউটিউব ও বিভিন্ন জার্নালের কলাম পড়ে বাদামের সঙ্গে কাউন চাষ শুরু করি। কৃষিতে পূর্ব ধারণা না থাকায় বিষয়টি আমার জন্য কঠিন ছিল। বাদাম এবং কাউন একসঙ্গে চাষ করা তেমন সহজ ছিল না। 

আরো পড়ুন : যে জাতের আলু চাষের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয়

এলাকার কৃষকরা তেমন একটা উৎসাহ জোগায়নি। তবে আমি থেমে যাইনি। বাদামের সঙ্গে কাউন চাষে তেমন একটা খরচ নেই। সেচ অনেক কম লাগে এবং অনাবৃষ্টিতেও সমস্যা নাই। এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩ একর জমিতে বাদাম চাষে সব মিলে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজার হিসেবে প্রায় ৪ লাখ হতে ৫ লাখ টাকা আয় হতে পারে বলে আশা করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে জেলার বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, বাদামে সাথে কাউন চাষে বেশ ঝুঁকি রয়েছে। এটি চাষাবাদে অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। তবে এ তরুণ উদ্যোক্তা সফলতার মুখ দেখেছেন। তার সফলতা আমাদের কৃষকদের উৎসাহিত করবে। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিকভাবে সহযোগিতা প্রদান করে আসছে।

রেজার কাউন ক্ষেত দেখতে আসা দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এটিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, ছোট বেলায় এ ফসল আমার নিজ এলাকায় অনেক কৃষককে চাষ করতে দেখেছি । আমার পরিবারে বাপ-দাদারা এ কাউনের ফসল চাষ করেছে।  কিন্ত আমি শিক্ষকতা পেশায় আসার পর আজ স্ব-চক্ষে আধুনিক কাউনের চাষ দেখলাম। কাউনের বাম্পার উৎপাদন ও ফলন দেখে অনেক ভালো লাগল। আমি শিক্ষার্থীদের মাস্টার্সে ফসলের রোগতত্ত্ব বিষয় নিয়ে ফসলের ক্ষেতে গিয়ে গবেষণামূলক শিক্ষা দিয়ে থাকি। আধুনিক কাউন চাষ মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের গবেষণার একটি অন্যতম বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

এস/ আই.কে.জে/

কৃষক দিনাজপুর

খবরটি শেয়ার করুন