শুক্রবার, ১৭ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** রাকসুতে ২৩ পদের মধ্যে ২০টিতেই শিবিরের জয় *** দুই দাবিতে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মঞ্চে অবস্থান ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ *** রাকসুতে ভিপি-এজিএসে শিবির, জিএস আধিপত্যবিরোধী ঐক্যের জয় *** রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ছেঁউড়িয়ায় লালন স্মরণোৎসব শুরু হচ্ছে আজ *** জুলাই সনদ স্বাক্ষরের অপেক্ষা *** ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তরের মানুষ... *** সব গণমাধ্যমকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার *** ‘লং মার্চ টু যমুনা’ স্থগিত, নতুন কর্মসূচি দিলেন শিক্ষকরা *** জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুক্রবারই, বাদ পড়লে পরেও স্বাক্ষর করা যাবে: আলী রীয়াজ *** সাবেক বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

অজানা এক মানব প্রজাতির পাশাপাশি ছিল আমাদের পূর্বপুরুষেরা, ইথিওপিয়ায় মিলল প্রমাণ

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, ১৮ই আগস্ট ২০২৫

#

ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলে পাওয়া জীবাশ্ম দাঁত। ছবি: সিএনএন

ইথিওপিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘদিনের প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে পাওয়া কিছু দাঁতের জীবাশ্ম মানব বিবর্তন নিয়ে নতুন রহস্য উন্মোচন করেছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রায় ২৬ থেকে ২৮ লাখ বছর আগে একই এলাকায় অন্তত দুই ধরনের হোমিনিন বা মানব পূর্বপুরুষ বসবাস করত। এর মধ্যে একটি গোষ্ঠী আধুনিক মানুষের পূর্বপুরুষ ‘হোমো’ গণভুক্ত, অন্যটি ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ গণের, যাদের মধ্যে হয়তো এখনো কোনো প্রজাতি অজানা রয়ে গেছে।

এই আবিষ্কার মানব বিবর্তনের জটিলতায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যোগ করেছে। কারণ, এত দিন মনে করা হতো, ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ বিলুপ্ত হওয়ার পরই ‘হোমো’ প্রজাতির উদ্ভব ঘটেছিল। কিন্তু নতুন দাঁতের ফসিল প্রমাণ করছে, দুটি গণ একসঙ্গে একই সময়ে বেঁচে ছিল। খবর সিএনএনের।

১৩ই আগস্ট নেচার জার্নালে এ বিষয়ে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এতে ২০১৫ সালে পাওয়া তিনটি দাঁত হোমো গণের বলে শনাক্ত করা হয়েছে। পরে ২০১৮ ও ২০২০ সালের খননে পাওয়া ১০টি দাঁত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এগুলো অস্ট্রালোপিথেকাসের অন্তর্গত, তবে এই গণের পরিচিত প্রজাতি ‘আফারেন্সিস’ বা ‘গার্হি’-র সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। গবেষকদের ধারণা, এটি হতে পারে নতুন এক অজানা প্রজাতি।

গবেষণার সহলেখক কায়ে রিড বলেছেন, মানব বিবর্তনকে অনেকেই সরলরেখায় কল্পনা করেন—বানর থেকে নিয়ান্ডারথাল, তারপর আধুনিক মানুষ। কিন্তু আসলে এটি ছিল জটিল এক শাখাবিশিষ্ট বৃক্ষ, যেখানে বহু প্রজাতি একসঙ্গে বেঁচে থেকেছে, আবার বিলুপ্তও হয়েছে।

এ বিষয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রালোপিথেকাস প্রজাতির সবচেয়ে বিখ্যাত জীবাশ্ম ‘লুসি’ আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়াতেই। মাত্র এক মিটার উচ্চতার লুসির মুখ ছিল বানরের মতো, মস্তিষ্ক ছিল মানুষের আকারের তিন ভাগের একভাগ, তবে সে সোজা হয়ে হাঁটতে পারত। এবার পাওয়া দাঁতগুলো প্রমাণ করছে, লুসির পরও ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ গণভুক্ত মানব পূর্বপুরুষেরা কোনো এক রূপে পৃথিবীতে ছিল এবং তারা প্রাথমিক হোমো প্রজাতির পাশাপাশি সহাবস্থান করেছিল।

দাঁতগুলো পাওয়া গেছে ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলে। মানব বিবর্তন গবেষণার জন্য এই অঞ্চল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে টেকটোনিক প্লেটের ক্রমাগত সরে যাওয়া এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে প্রাচীন স্তরগুলো উন্মুক্ত হয়েছে। ফলে কয়েক মিলিয়ন বছরের বিবর্তনের সাক্ষ্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অস্ট্রালোপিথেকাস দাঁতগুলোর বয়স প্রায় ২৬ লাখ ৩০ হাজার বছর। আর হোমো দাঁতগুলোর বয়স ২৫ লাখ ৯০ হাজার থেকে ২৭ লাখ ৮০ হাজার বছরের মাঝামাঝি কোনো সময়ে। তবে বিজ্ঞানীরা এখনই চূড়ান্তভাবে প্রজাতি নির্ধারণ করতে চান না। তারা বলছেন, দাঁত ছাড়া অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জীবাশ্ম পাওয়া গেলে আরও স্পষ্ট ধারণা মিলবে।

জে.এস/

গবেষণা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250