ছবি: সংগৃহীত
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ‘মব ভায়োলেন্স’ (দলবদ্ধ সহিংসতা) হলে তা নারী ভোটারদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন নারীনেত্রীরা। এ ছাড়া নারীবিদ্বেষী ব্যক্তিরা যাতে নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, সে বিষয়েও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে কালোটাকা ও পেশিশক্তি ব্যবহার করে কেউ যাতে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারেন, সে ব্যাপারে ইসিকে সতর্ক থাকতে বলেছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার (৭ই অক্টোবর) সকালে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবং বিকেলে নারীনেত্রীদের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। সংলাপের দুই পর্বেই সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করাকে জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন—এমনটি উল্লেখ করে সিইসি বলেন, একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে একটা বিশেষ ধরনের সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে হচ্ছে। এটাকে তিনি দেশের জন্য কিছু করতে পারার শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন এবং তার প্রতিশ্রুতি একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার।
তিনি বলেন, গত তিন নির্বাচনে যারা কাজ করেছেন, তারা যেন ধারেকাছে না আসতে পারেন, এমন কথা অনেকে বলছেন। এখন ১০ লাখ লোকের (ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা) মধ্যে বাদ দিতে গেলে লোম বাছতে গিয়ে কম্বল উজাড় হবে।
‘জেন্ডার ফ্রেন্ডলি’ নির্বাচন করার আশাবাদ ব্যক্ত করে সিইসি বলেন, নারীরা যাতে নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে কাজ করবে ইসি।
সংলাপে সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাসউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। সংলাপ সঞ্চালনা করেন ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ।
নারীবিদ্বেষী, সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা যাতে নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, সে বিষয়ে ইসির যথাযথ ভূমিকা চান মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। এর পাশাপাশি নারী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রেও ইসির সচেতনতা দরকার বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে শুধু নির্বাচনের আগে নয়, পরেও কোন কোন এলাকায় ‘মব ভায়োলেন্স’ হতে পারে, তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে সংসদীয় আসন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সংলাপে তুলে ধরেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক।
তিনি বলেন, সংসদীয় আসন ৬০০টি করতে হবে। যেখানে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একটি সাধারণ আসন এবং নারীদের জন্য একটি সরাসরি নির্বাচিত সংরক্ষিত আসন থাকবে। সাধারণ আসনের মতো সংরক্ষিত আসনেও সরাসরি নির্বাচন হতে হবে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন