ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীতে আগামী শুক্র ও শনিবার অনুষ্ঠিত হবে আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলা। উন্নয়ন সংগঠন নাগরিক উদ্যোগ ও আদিবাসী সুহৃদদের যৌথ উদ্যোগে মিরপুর ১৩–এর পার্বত্য বৌদ্ধসংঘ কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলার আয়োজকদের পক্ষে মেইনথিন প্রমীলা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মেলার স্টল বরাদ্দের বিষয়টি প্রচার হওয়ার পর থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের পাশাপাশি সমতলের মান্দি, মনিপুরি, সাঁওতাল ও রাখাইনদের অনেক উদ্যোক্তা ইতোমধ্যে স্টলের জন্য বুকিং দিয়েছেন। স্টল বুকিংয়ে আদিবাসী নারী উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
মেইনথিন প্রমীলা বলেন, মেলায় থাকছে রাজধানীর সুপরিচিত পাহাড়ি নারী পরিচালিত 'হেবাং রেস্তোরাঁ'। সমতলের আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় খাবারের পসরা সাজিয়ে বসবেন মনিপুরি, গারো ও রাখাইনরা। কালো ও সাদা বিনি চালের বিভিন্ন প্রকার মুখরোচক পিঠা নিয়ে হাজির হচ্ছেন রাখাইন জাতিসত্তার খাদ্য উদ্যোক্তরা। আরও থাকছে হালনাগাদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অনেক ধরনের মুন্ডি।
আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী রন্ধনপ্রণালির তেল ও মসলামুক্ত জনপ্রিয় খাবার নিয়ে অনেক স্টল থাকছে মেলায়। এছাড়া পাহাড়ের জনপ্রিয় বাঁশ কোড়ল, কলা পাতার রান্না করা বিভিন্ন পদের হেবাং রয়েছে। পাহাড়ি মুরগি ও কাপ্তাই হ্রদের মাছসহ জুমের (পাহাড়ের বিশেষ কৃষিপদ্ধতি) সবজির মুখরোচক খাবার থাকছে।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, মেলার বিশেষ আকর্ষণে থাকছে পাহাড়ের বাঁশের হুক্কা। যা বাঁশ দাবা নামে বেশি পরিচিত। থাকবে নানা প্রকার টাটকা ফলের ঝাল আইটেম। এই ঝাল আইটেম 'লাকসো' নামে বেশি পরিচিত।
মেলায় আরও থাকছে কালা বিনিসহ বিভিন্ন জাতের বিনি চালের সমাহার। পাহাড়ি মধুও মেলায় পাওয়া যাবে। জুমের শাকসবজি, ফলমূল, বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা জাতের কৃষিপণ্যের সমাহার এবং শুঁটকির পসরা নিয়ে অনেক উদ্যোক্তা উপস্থিত হবেন।
অন্যতম আয়োজক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, দেশের শহুরে নাগরিক জনগোষ্ঠীকে আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় সমৃদ্ধ জুম কৃষির বিভিন্ন শস্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই মেলার আয়োজন।
তিনি আরও বলেন, আদিবাসী উদ্যোক্তরা যেন বেশি বেশি ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে পারেন, সেই তাগিদ থেকেই আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলার আয়োজন করা। এবার চতুর্থ বছরের মতো আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলাটি ইতোমধ্যে রাজধানীবাসীর কাছে বেশ সমাদৃত হয়েছে।
মেলার পাশাপাশি সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ আদিবাসী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাও দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন। সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আইডল মং, পাহাড়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জলিপ্রু মারমা, সমান্তর চাকম, কুলিন চাকমা ও গারোদের উদীয়মান গায়ক মার্কুস চিসিমের পরিবেশনা থাকবে। এ ছাড়া থাকছে পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশনা।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন