ফরিদা পারভীন ও গাজী আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর প্রয়াত হয়েছেন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। গত শনিবার (১৩ই সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। এ সময় ফরিদা পারভীনের স্বামী বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম বলেন, ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পী শতবর্ষে একবার আসেন।
গাজী আবদুল হাকিম বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পী শতবর্ষে একবার আসেন। তার চলে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে, আমি জানি না। কারও জন্য তো কোনোকিছু আটকে থাকে না। এটাও ঠিক ফরিদা পারভীন আর আসবেন না। কাজী নজরুল ইসলাম কি আর কোনো দিন হবে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি হবে? আমি তাদের সঙ্গে তুলনা করছি না। কিন্তু ফরিদা পারভীন শতবর্ষে একবার আসেন। কুষ্টিয়ার আখড়া থেকে পৃথিবীর দরবারে লালনগীতি পৌঁছে দিয়েছেন ফরিদা পারভীন। বড়লোকদের ড্রয়িং রুমে পৌঁছে দিয়েছেন। এরচেয়ে বড় কিছু তো আর হতে পারে না।’
গাজী আবদুল হাকিম শুধু ফরিদা পারভীনের জীবনসঙ্গী ছিলেন না, কর্মক্ষেত্রেও তারা ছিলেন সফল যুগল। ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে লালনগীতির সঙ্গে গাজী আবদুল হাকিমের বাশির সুর মিশে যেন ভিন্ন এক মাত্রা পেত। ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনের সঙ্গীকে হারিয়ে বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন গাজী আবদুল হাকিম।
গাজী আবদুল হাকিম বলেন, ‘তার স্মৃতি নিয়ে বাকি জীবনটুকু বেঁচে থাকতে হবে। কিন্তু এই বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের। আমরা যুগলবন্দী ছিলাম। আমার বাশি আর ফরিদা পারভীনের গান যেভাবে ক্লিক করেছে, সেটা আর কোথাও হয়নি। আমি জানি না আমার বাশির সুরের কী হবে। হয় আমাকে ছেড়ে দিতে হবে, না হলে আরও বেশি করে বাজাতে হবে, যাতে ওপারে সে তৃপ্তি পায় যে, আমার হাকিম তো বাশিটা বাজাচ্ছে।’
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহর নামাজের পর ফরিদা পারভীনের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জানাজা শেষে ঢাকা ছেড়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হয় ফরিদা পারভীনের মরদেহ। গায়িকার পরিবার জানিয়েছে, কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে তাকে কুষ্টিয়ার পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন