ছবি: সংগৃহীত
ঢাকাই সিনেমা এখন ঈদকেন্দ্রিক। সারা বছর খালি থাকলেও ঈদের সময় দর্শকে মুখর হয়ে ওঠে সিনেমা হলগুলো। তবে গত কয়েক বছর রোজার ঈদের সিনেমাগুলোতে আশানুরূপ সাফল্য মেলেনি। ‘প্রিয়তমা’, ‘পরাণ’, ‘তুফান’-এর মতো ব্যবসাসফল সিনেমাগুলো মুক্তি পেয়েছে কোরবানির ঈদে। এবার সেই খরা বুঝি কাটল।
ঢাকাই সিনেমায় বইছে সুবাতাস। এ সুবাতাস যদিও ঈদকেন্দ্রিক সিনেমাকে ঘিরে, তারপরও সিনেমাপাড়া হঠাৎ সরব হয়ে ওঠেছে। দর্শকরা ভিড় করছেন প্রেক্ষাগৃহে। অনেকে টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। হাউসফুল যাচ্ছে কোনো কোনো সিনেমার। ঢাকাই চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ ধারা বছরব্যাপী অব্যাহত থাকলে দেশের সিনেমা শিল্প সোনালি সময়ে ফিরে যেতে পারবে।
এবার ঈদুল ফিতরে ছয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাগুলো হচ্ছে 'বরবাদ', 'দাগি, 'অন্তরাত্মা, 'জংলি, 'জ্বীন-৩' এবং 'চক্কর ৩০২'। এ ছয় সিনেমার বাজেট প্রায় ২৬ কোটি টাকা। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে সিনেমা নির্মাণের বাজেটের বিষয়ে জানা গেছে।
ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে টিকিট বিক্রির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ‘বরবাদ’। এরপর মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে ‘দাগি’ সিনেমার কথা। ‘জংলি’ সিনেমাও দেখছেন দর্শকরা। ‘চক্কর ৩০২’ সিনেমার শো কম হলেও দর্শকরা সেটি দেখছেন।
এর আগে এক ঈদে ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ বেশ সাড়া ফেলেছিল। দর্শকরা খুব ভিড় করেছিলেন প্রেক্ষাগৃহে। তখনো ঈদকেন্দ্রিক ঢাকাই সিনেমা হঠাৎ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। বিরতির পর আবারও ঈদের সিনেমা দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রেক্ষাপট।
তিনটি সিনেমার টিকিট পাচ্ছেন না অনেক দর্শক। একটি হচ্ছে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’। অন্য দুটি হচ্ছে আফরান নিশোর অভিনীত ‘দাগি’ ও সিয়াম আহমেদ অভিনীত ‘জংলি’। তিনটি সিনেমার অনেক শো হাউসফুল গেছে। সেই সঙ্গে অনেক দর্শক টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছেন।
ঈদকেন্দ্রিক ঢাকাই সিনেমার সুবাতাসে খুশি চলচ্চিত্রের মানুষরা। পরিচালক, প্রযোজক ও শিল্পীরা নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন। ঈদে যাদের সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, তারা সবচেয়ে বেশি খুশি।
শহীদুজ্জামান সেলিম অভিনীত তিনটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ঈদে। তিনি সুখবর ডটকমকে বলেন, ‘ঈদকেন্দ্রিক হলেও ঢাকাই সিনেমায় সুবাতাস বইছে। এটি আমাদের দেশের সিনেমার জন্য খুবই ইতিবাচক দিক। এভাবে যদি বছরজুড়ে ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি দেওয়া যেত, তাহলে দেশের সিনেমা দ্রুত ঘুরে দাঁড়াত।’
তমা মীর্জা অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা এ ঈদে মুক্তি পেয়েছে। দর্শকরা বেশ ভালোভাবে নিয়েছেন এটি। মুক্তির পর টানা কয়েকদিন হাউসফুল গেছে। কেউ কেউ টিকিটও পাননি। তমা মীর্জা বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন অনেক ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে। দর্শকরা ভালো গল্পের সিনেমা পেলে প্রেক্ষাগৃহে দেখতে যান। তার প্রমাণ বহুবার পাওয়া গেছে। দাগিসহ আরও কয়েকটি সিনেমা এবারের ঈদেও তা প্রমাণ করেছে।’
ঢাকাই সিনেমায় সুবাতাস সত্যিই বইছে কী, এমন প্রশ্নের জবাবে সিয়াম আহমেদ সুখবরকে বলেন, ‘ঈদের এ সময়ে নিঃসন্দেহে বলতেই পারি ঢাকাই সিনেমায় সুবাতাস বইছে। হোক না এটা উৎসবকেন্দ্রিক। তারপরও তো বইছে। আমাদের দরকার এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখা।’
এইচ.এস/