রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের উৎপাদনে ফিরলো মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৩০ অপরাহ্ন, ৩০শে নভেম্বর ২০২৪

#

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ থাকার পর অবশেষে উৎপাদনে ফিরেছে মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট শনিবার (৩০শে নভেম্বর) বিকেল থেকে উৎপাদনে ফিরে।

গত বুধবার (২৭শে নভেম্বর) সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৬৯ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ী বন্দরে পৌঁছায়। এতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে ফিরে। এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানায়, ইন্দোনেশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়লে বুধবার বিকেল থেকে কয়লা খালাসের কার্যক্রম চলে। আজ শনিবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হয়েছে। আগামীকাল রোববার (১লা ডিসেম্বর) ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আরও একটি জাহাজ মাতারবাড়ীতে আসবে।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কয়লার চাহিদা পূরণ হওয়ায় শনিবার বিকেল থেকে পুনরায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরতে সক্ষম হই আমরা। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত কয়লা খালাস প্রক্রিয়া শেষের দিকে। আগামীকাল আরও একটি কয়লাবাহী জাহাজ বন্দরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা এটি কয়লার প্রথম চালান।

এই কর্মকর্তা জানান, শনিবার বিকেল থেকে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালু হয়। কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, তিন বছরের জন্য কয়লা সরবরাহের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলেও সেই প্রক্রিয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জটিলতায় পড়ে। বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রো কনসোর্টিয়ামের অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট গত জুলাই মাসে কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে কয়লা আমদানি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কয়লা আমদানিতে সময় লেগে যায় নভেম্বর পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অবশেষে কয়লার চালান পৌঁছানোর কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে যেতে পেরেছে। এর ফলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন পর আবারো মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদুৎ উৎপাদন শুরু হওয়া দেশের জন্যে খুবই স্বস্তিদায়ক। কারণ সরকার পরিবর্তনের পর অনেকটা অনিশ্চিত ছিল এই প্রকল্পের কাজ। নতুন করে পুনরায় বিদুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিদুৎ সরবরাহ যোগ হবে। সেই সাথে কমে আসতে পারে লোডশেডিংয়ের মাত্রাও।

প্রসঙ্গত, ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা নিয়ে দেশের অন্যতম বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প। এর প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ডিসেম্বর মাসে চালু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যোগ করার মাধ্যমে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

কর্মকর্তারা আশা করছেন, কয়লা সরবরাহ নিয়মিত হলে ভবিষ্যতে বিদুৎ উৎপাদন চালিয়ে যেতে আর কোনো বাধা থাকবে না।

ওআ/কেবি

বিদ্যুৎকেন্দ্র

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন