শনিবার, ৮ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** বিএনপি নেতা রিজভীকে পা ছুঁয়ে সালাম করা সেই সার্জেন্ট সাময়িক বরখাস্ত *** ‘এখন যুবলীগের কার্যক্রম নেই, তাই এনসিপিতে এসেছি’ *** ‘জুমার পর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মারামারি’—মাইকিংয়ের পর ভুল স্বীকার সেই কদ্দুস মিয়ার *** ‘ঘি খেতে চাইলে চামচ দিয়ে ভদ্রভাবে খান, আঙুল বাঁকিয়ে কেন’ *** বাংলাদেশ সীমান্তে যে কারণে নতুন ৩ সামরিক ঘাঁটি বানাচ্ছে ভারত *** নির্বাচন হলে ক্ষমতা থাকবে ভারতের কাছে: ফরহাদ মজহার *** বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আসামে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে ভারত *** জাতীয় দলে যৌন হয়রানির অভিযোগ জাহানারার, তদন্ত চান ক্রিকেটারেরা *** নির্বাচনে খরচ করার মতো টাকা নেই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের *** নেদারল্যান্ডসের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী রব জেটেন

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ায় কংগ্রেস কর্মীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, ৩০শে অক্টোবর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া দেশদ্রোহের শামিল বলে ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা শ্রীভূমির ‘অপরাধী’ কংগ্রেসিদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

গতকাল বুধবার (২৯শে অক্টোবর) মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা আসাম পুলিশকে এই নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, অপরাধী নেতাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত সোমবার আসামের করিমগঞ্জ জেলার শ্রীভূমি শহরে কংগ্রেস সেবাদলের বৈঠকে স্থানীয় এক নেতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি পরিবেশন করেন। এই গান বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন বিজেপিশাসিত আসামের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অশোক সিংঘল। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘কংগ্রেসের সভায় সেই দেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া হচ্ছে, যারা উত্তর-পূর্ব ভারতকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়।’

অশোক সিংঘলের আরও অভিযোগ, কংগ্রেস ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করে। সেই রাজনীতির মধ্য দিয়ে তারা আসামের জনবিন্যাসের বদল ঘটাতে চায়। তাই তারা কয়েক দশক ধরে অনুপ্রবেশে মদদ দিয়ে আসছে। তার অভিযোগ, কংগ্রেস বৃহত্তর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাইছে।

ওই পোস্টের পরপরই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। রাজ্যের বিজেপি নেতারা মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।

গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে দেশদ্রোহের অভিযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের যারা ভারতের সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে তাদের দেশের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে চান, কংগ্রেস তাদের মদদ দিচ্ছে। সে দেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া ওই পরিকল্পনাকেই অনুমোদন করছে।

হিমন্ত বলেন, কংগ্রেসের সভা শুরু হচ্ছে ভারতের নয়, বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গেয়ে। এটা দেশের জনগণ ও জাতীয় সংগীতের অবমাননা। এ কারণে তিনি শ্রীভূমির কংগ্রেস কমিটি ও তার নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের বিভিন্ন ধারায় মামলা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, কংগ্রেসের নেতাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কংগ্রেসের ওই সভার ভিডিওটি আসাম বিজেপির পক্ষ থেকেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে কংগ্রেসবিরোধী প্রচার।

রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা হয়েছে, কংগ্রেস বাংলাদেশের মোহে আচ্ছন্ন। বিজেপি অভিযোগ তুলে লিখেছে, ‘মাত্র কয়েক দিন আগে ভারতের গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে নিয়ে বাংলাদেশ এক মানচিত্র প্রকাশ করেছিল। এখন বাংলাদেশ নিয়ে আচ্ছন্ন কংগ্রেস আসামে গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাইছে। এরপরও কেউ যদি কংগ্রেসের উদ্দেশ্য বুঝতে না পারেন, তা হলে হয় তিনি অন্ধ, কিংবা মদদদাতা অথবা দুটিই।’

বিতর্ক শুরু হতেই সরব হয় কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গৌরব গগৈ সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালি সংস্কৃতির আবেগ। বিজেপি সব সময় বাংলা ভাষা, বাঙালি সংস্কৃতি ও বাংলার মানুষকে অপমান করে। বাঙালিদের তাচ্ছিল্য করে।

গগৈ বলেন, বিজেপি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শন বোঝে না। বাঙালির ইতিহাস তারা জানে না। বাংলার মানুষ ও বাঙালিদের তারা স্রেফ ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করে। বাঙালির ভাষা, আবেগ ও সংস্কৃতি বোঝার চেষ্টা করে না।

গৌরবসহ কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, জ্বলন্ত সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে এই অপ্রয়োজনীয় ও অনভিপ্রেত বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তারা অনাবশ্যক রাজনীতি করছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি লিখেছিলেন ১৯০৫ সালে, ব্রিটিশ রাজ যখন বঙ্গভঙ্গের উদ্যোগ নিয়েছিল। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ এই গানটিকে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা দেয়।

জাতীয় সংগীত

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250