সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে
প্রায় ১৯ বছর পর গতকাল রোববার (১৪ই সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলেন বিএনপির নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন বাবর।
বৈঠক শেষে বাবর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরছেন। তাই তার নিরাপত্তা নিয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন। বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান বিকেল সোয়া চারটার দিকে। সেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গণিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বৈঠক শেষে বের হওয়ার পথে লুৎফুজ্জামান বাবর সাংবাদিকদের বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বর্তমান সরকারকে সাহায্য করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কিছু কিছু বিষয় উদ্বেগের।
কী বিষয়ে উদ্বিগ্ন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশে এস আলমের একটি সভা হয়েছে। সে সভার উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন বানচাল করা। এটা উদ্বেগের। এ বিষয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আরও অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে অবৈধ অস্ত্র ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ার বিষয়টি রয়েছে।
বাবর বলেন, তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরছেন। তার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার ভালো করার চেষ্টা করছে।
লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
২০০৪ সালের ১লা এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান জব্দ করা হয়। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা হয়। এ দুই মামলা এবং ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামি ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর।
এসব মামলায় বিচারিক আদালতে তার সাজা হলেও পরে উচ্চ আদালত তাকে খালাস দেন। এ ছাড়া দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন আটটি মামলায় তিনি জামিন পান। চলতি বছরের ২৫শে জানুয়ারি তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ২০০৭ সাল থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
খবরটি শেয়ার করুন