ছবি: সংগৃহীত
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্যজীবীদের তালিকায় অনেক অমৎস্যজীবী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে - এটা অন্যায়। তাই তালিকা এমনভাবে হালনাগাদ করা হবে যেন অন্যায়ভাবে কেউ তালিকায় প্রবেশ করতে না পারে। নারী মৎস্যজীবীদের তালিকায় অগ্রাধিকার দেয়ার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, নারী জেলেরা যেন দৃশ্যমান হয়, তাদের যেন তালিকায় নাম থাকে এবং একই পরিবারে পুরুষ জেলে থাকলেও নারীদের অগ্রাধিকার দিতে চাই। কোনও অমৎস্যজীবী যেন তালিকায় প্রবেশ করতে না পারে তা কঠোরভাবে দেখা হবে।
রোববার (২৩শে ফেব্রুয়ারি) সকালে মনপুরা উপজেলার ঢালচরে জেলেদের সাথে জেলে নিবন্ধন হালনাগাদ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চল বলে কিছু থাকতে পারে না। মনপুরার জেলেরা ইলিশ মাছ দেশবাসীকে খাওয়াচ্ছে আর সরকারি চাকরিজীবীরা এ অঞ্চলের মানুষদের সেবা দিবেন না তা হতে পারে না।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মহিষ অত্যন্ত মূল্যবান প্রডাক্ট। মহিষের মাংস গরুর মাংসের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। মহিষ, ভেড়া লালন-পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে এ অঞ্চলে ভেটেরিনারি চিকিৎসকদের মাধ্যমে পশুপাখির চিকিৎসা দেয়া হবে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, পানি থাকলে মাছ থাকবে। নদী, নালা, খাল, বিল খননের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে কিন্তু খনন করার দায়িত্ব মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নয়। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো তারা যেন খনন করে মৎস্যসম্পদকে রক্ষা করে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা গবেষণা করে দেখেছি আমাদের ব্যান পিরিয়ডে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ইলিশ মাছ ধরছে অথচ আমাদের জেলেরা সে সময় বসে থাকে। আর এই নিষেধাজ্ঞা এমনভাবে করা হচ্ছে যেন ভারতীয় জেলেরা কোনভাবেই আমাদের দেশ থেকে ইলিশ ধরতে না পারে। আর সেজন্যই নিষেধাজ্ঞা সময় আটান্ন দিন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন বেকার সমস্যা দূরীভূত করতে শুধু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একা পারবে না, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তরুণরা আমাদের নতুন বাংলাদেশ দিয়েছে ; আমরা যেন বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারি তার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
আরও পড়ুন: ‘ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯টি খাল সংস্কারের মহাপরিকল্পনা’
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্হান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঢালচরের মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে এখানে ঘাট তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে এ অঞ্চলের মানুষ বিশেষ করে মৎস্যজীবীরা অনেক উপকৃত হবেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারণা হলো প্রত্যন্ত এলাকার উন্নয়ন। ঢাকায় বসে উন্নয়নের কথা বললে হবে না। যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যাবে তখনই হবে টেকসই উন্নয়ন।
পরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা মনপুরার বিভিন্ন চরাঞ্চালের নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে কার্ড বিতরণ করেন।
এসি/ আই.কে.জে