মঙ্গলবার, ২২শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান হতে পারবেন না—এই দাবির যৌক্তিকতা নেই: সালাহউদ্দিন *** আখের চিনি দিয়ে ‘ট্রাম্প ভার্সন’ বাজারে আনছে কোকা-কোলা *** বিমান বিধ্বস্তে হতাহতদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে সরকার: প্রেস উইং *** ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি, ফিরেছেন বাসায় *** জাকেরের ফিফটিতে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ *** ২৪শে জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষাও স্থগিত *** ঠাকুরগাঁওয়ে অপহৃত কিশোরী ৫০ দিন পর টাঙ্গাইলে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১ *** ভারত থেকে আজই দেশে আসছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও সরঞ্জাম *** পাইলট খালি মাঠে বিমানটি নামানোর চেষ্টা করেছিলেন: বিমানবাহিনীর প্রধান *** ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন

ছিল না বাবা, কষ্ট করে মা পড়ালেন, তিন যমজ ভাই এখন মেডিকেলের ছাত্র

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৩২ অপরাহ্ন, ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

২০০৯ সালে ওদের বাবা গোলাম মোস্তফা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তখন ওদের বয়স ৫ মাস। বাবার স্নেহ মমতা কিছুই পায়নি ওরা। এক পর্যায়ে তিন সন্তানকে পড়ালেখা করানো নিয়ে অনেক বিপাকে পড়ি। নিজে কষ্ট করে জমি বিক্রি করে ওদের পড়ালেখা করিয়েছি। 

প্রায় ৫ বিঘা জমি ছিল। ওদের বড় করতে বাবার বাড়ির জমিও বিক্রি করে দিয়েছি। বাকি যা আছে তাও প্রয়োজনে বিক্রি করব। তবুও ওদের ডাক্তার বানাব। যাতে আমাদের মতো গরিব মানুষদের সেবা করতে পারে। আমি কত খুশি হয়েছি প্রকাশ করতে পারব না। গ্রামের লোকজন ওদের যখন দেখতে আসে তখন বুক ভরে যায়।

কথাগুলো বগুড়ার ধুনট উপজেলার রত্নগর্ভা মা আর্জিনা বেগমের। রত্নগর্ভা এই মায়ের তিন যমজ সন্তান পড়েন সরকারি মেডিকেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে মাফিউল হাসান ২০২৩ সালে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে এবং এবার (২০২৪) সালে সাফিউল হাসান দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে এবং রাফিউল হাসান নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। 

তারা ধুনট নবির উদ্দিন পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পরে বগুড়া সরকারি কলেজ শাহ সুলতান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন।

ধুনট নবির উদ্দিন পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সোমবার (১২ই ফেব্রুয়ারি) তিন ভাই একসঙ্গে স্কুলে আসে। শিক্ষকদের কাছ থেকে দোয়া চায়। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি। তারা মিষ্টি নিয়ে এসেছিল। ওদের মেডিকেলে সুযোগ পাওয়া আমাদের স্কুলের গৌরব ও সুনামের।

আরো পড়ুন: এক মাছের দাম ৪ লাখ টাকা!

গত শিক্ষাবর্ষে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া মাফিউল হাসান বলেন, আমরা তিন যমজ ভাই বগুড়ায় মেসে একই সঙ্গে থেকে সরকারি শাহ সুলতান কলেজে পড়েছি। মা কষ্ট করে এবং জমি বিক্রি করে পড়ালেখা করিয়েছেন। কখনোই আমাদের কষ্ট করতে দেননি। বথুয়াবাড়ি গ্রামের মধ্যে আমরাই প্রথম মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। এর আগে আর কেউ সুযোগ পায়নি। খুবই ভালো লাগছে আমরা তিন ভাই ডাক্তার হব।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়া শাফিউল বলেন, আজ বাবা থাকলে কত খুশি হতেন। বাবাকে হারিয়েছি শিশুকালে। এখন মা আমাদের বাবার অভাব পূরণ করেছেন। মানুষের সেবা করার জন্য যাতে চিকিৎসক হতে পারি সবার কাছে এ দোয়া চাই।

নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে সুযোগ পাওয়া রাফিউল ইসলাম বলেন, অসুস্থ অবস্থায় বাবা মারা যান। যখন বিষয়টি জানতে পারলাম তখন থেকেই তিন ভাই ডাক্তারি পড়ার প্রতিজ্ঞা করি। গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা করব। বাবার মতো যেন কাউকে অকালে ঝরে পড়তে না হয়।

সরকারি শাহ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম বলেন, শুনেছি তিন যমজ ভাইয়ের মধ্যে গতবার একজন এবং এবার দুজন মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। ওদের জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।

এইচআ/ আই. কে. জে/  


সরকারি মেডিকেল যমজ ভাই রত্নগর্ভা মা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন