ছবি: ত্রিপুরা রাজ্য সরকার
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের একটি কারাগারে একজন কারারক্ষীকে পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে গেছে ছয়জন বন্দী, যাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশের নাগরিকও রয়েছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরের কালিকাপুর সাব জেলে বুধবার (১লা অক্টোবর) সকাল ৬টা ২ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে সেই ঘটনাটি। খবর বিবিসি বাংলার।
পালিয়ে যাওয়া ছয়জনের মধ্যে একজন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও বাকি পাঁচজনের বিচার চলছে বলে জানান ধর্মনগর মহকুমার শাসক এবং ওই সাব জেলের সুপার দেবযানী চৌধুরী।
তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘জামনগর সাবজেলের জেলারের কাছ থেকে একটি ফোনকল পেয়ে আমি ছুটে আসি। সাবজেলে এসে আমি সেখানে যে স্টাফরা উপস্থিত ছিল তাদের কাছ থেকে সব তথ্য নেই।’
দেবযানী চৌধুরী বলেন, ‘আমি তদন্ত শুরু করেছি। এসডিপিও ধর্মনগর ও নর্থের এসপিও পৃথক তদন্ত করছেন। বিএসএফ এবং সাব জেলের আশপাশের সব পুলিশ স্টেশনকে জানানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশপাশের সব সাব ডিভিশনের পুলিশকেও সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তাদের দ্রুত পাকড়াও করা যায়।’
কারা কর্তৃপক্ষ যে তালিকা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নামে একজন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন, যিনি জাল কাগজপত্র রাখার অভিযোগে আটক ছিলেন।
এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ধর্মনগর থানার পুলিশ জানায়, পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। আসামের নিলামবাজারের বাসিন্দা আব্দুল পাট্টা রাজ্য ছেড়ে পালানোর জন্য গাড়ি ভাড়া করেছিল, তখন পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। তবে এখনো বাকি পাঁচ বন্দী নিখোঁজ আছে।
জেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একজন বন্দী প্রথমে গামছা জাতীয় একটি কাপড় নিয়ে পেছন থেকে এসে কারাগারের গেটে বসে থাকা কারারক্ষীর গলা পেঁচিয়ে ধরে। সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে আরও দুজন বন্দী দৌড়ে এসে তাকে মারধর শুরু করে। পরে চার বন্দী মিলে কারারক্ষীকে মারতে থাকে এবং একজন কারাগারের গেট খুলে ফেলে।
এরপর আরেক জন কারারক্ষী এগিয়ে এলে দ্রুত পাঁচজন বন্দী গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ষষ্ঠজন গেটের পাশে একটি রুমে ঢুকে পড়ে। পরে একজন কারারক্ষী সরে গেলে রুম থেকে বেরিয়ে সেই ষষ্ঠ বন্দীও পালিয়ে যায়।
পলাতক বন্দীদের পরিচয় প্রকাশ করেছে জেল কর্তৃপক্ষ—নাজিম উদ্দিন, চুরি ও সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলায় জড়িত। রহিম আলী—ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) বা বিএনএস-এর ৩৩১/৩০৯ ধারার অধীনে একটি মামলায় অভিযুক্ত।
সুনীল দেববর্মা—খুনসহ গুরুতর অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত। নারায়ণ দত্ত—বাংলাদেশের নাগরিক ও অবৈধ দলিলপত্র রাখার একটি মামলায় জড়িত। রোজান আলী—দক্ষিণ কদমতলার জমির আলীর ছেলে, বিএনএসের ধারা ৩৩১/৩০৯ এর অধীনে একটি মামলায় অভিযুক্ত। আব্দুল পাট্টা—মাদক সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্ত।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন