প্রতীকী ছবি
চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুনান প্রদেশের রাজধানী চাংশার এক আবাসিক এলাকায় লাল ব্যানার টাঙিয়ে স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন তার স্ত্রী। ব্যানারে ওই নারী ব্যঙ্গ করে তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবীকে স্বামীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি করায় ‘কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেছেন।
হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ব্যানারটির পাশাপাশি সেখানে কিছু লাল পতাকাও ঝোলানো হয়েছিল। সেগুলোতে উল্লেখ করা হয়, ওই নারীর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শি হংশান কমিউনিটির পর্যটন ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের অর্থ বিভাগে চাকরি করেন।
ব্যানারে লেখা ছিল, ‘শি সামাজিক শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা ভঙ্গ করে তার বান্ধবীর স্বামীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক করেছে।’ ব্যানারের নিচে লেখা ছিল, ‘স্ত্রী।’ তবে ব্যানারগুলো শি’র বাসস্থানের আশপাশে টাঙানো হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এক লাল পতাকায় লেখা ছিল, ‘শি আমার ১২ বছরের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি আমার স্বামীকে যৌনসেবা দিয়েছেন।’ আরেক পতাকায় অভিযোগ করা হয়, ‘শি অফিস চলাকালীনও বান্ধবীর স্বামীর সঙ্গে হোটেলে গেছেন।’
হংশান কমিউনিটির পর্যটন ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা চীনা গণমাধ্যম দ্য পেপারকে জানিয়েছেন, তাদের দপ্তরে শি নামের একজন কর্মী আছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন। পরে অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যানার ও পতাকাগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। ওই নারী ও তার স্বামীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
চীনের শানসি প্রদেশের হেংদা ল ফার্মের আইনজীবী ঝাও লিয়াংশান বলেছেন, এসব ব্যানারে যদি মিথ্যা তথ্য বা মানহানিকর বক্তব্য থাকে, তবে তা শি’র ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, সুনাম ও ব্যক্তিত্বের অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে। এ ছাড়া, যদি এ ধরনের ব্যানার টাঙানো জনসমাগম ঘটায় বা জনসাধারণের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে, তবে তা জননিরাপত্তা প্রশাসন শাস্তি আইনের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। এতে দায়ী ব্যক্তিকে সতর্কবার্তা দেওয়া হতে পারে কিংবা সর্বোচ্চ ২০০ ইউয়ান (প্রায় ২৮ ডলার) জরিমানা করা হতে পারে।
গুরুতর ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যানার টাঙানো ব্যক্তিকে ১৯ দিন পর্যন্ত আটক এবং সর্বোচ্চ ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ৭০ আমেরিকারন ডলার) জরিমানা করা যেতে পারে। এর আগে, ২০২৩ সালে এক চীনা পুরুষ তার প্রাক্তন প্রেমিকাকে অপমান করে ব্যানার টাঙানোর অভিযোগে ১০ দিনের কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন। আইনজীবী ঝাও পরামর্শ দিয়েছেন, কারও অধিকার ক্ষুণ্ন হলে তিনি যেন আইনি উপায়ে প্রতিকার চান।
বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিভিন্ন জন বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। এক অনলাইন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটা বেআইনি, কিন্তু স্ত্রীর প্রতিশোধ আমি সমর্থন করি।’
অন্য এক মন্তব্যে বলা হয়, ‘ঘনিষ্ঠ বান্ধবী সরকারি চাকরিজীবী। কর্মস্থলে তাকে এখন ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’ তৃতীয় এক মন্তব্যে লেখা হয়, ‘স্ত্রী কীভাবে বান্ধবীকে অপমান করেছেন? তিনি তো কেবল কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।’ চীনে সাধারণত লাল পতাকা কারও সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন