ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারোর সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৭শে আগস্ট) ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি ওই মন্তব্য করেন।
ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাভারো বলেন, ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনা মূলত মস্কোর যুদ্ধযন্ত্রকে শক্তিশালী করছে। তার ভাষায়, ‘ভারত যা করছে, তার জন্য আমেরিকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভোক্তা, ব্যবসা ও শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ, ভারতীয় পণ্যে উচ্চ শুল্কের কারণে আমাদের চাকরি, কারখানা এবং আয় নষ্ট হচ্ছে। আবার মোদির এই যুদ্ধের খরচ বহন করতে হচ্ছে আমেরিকার করদাতাদেরও।’
সাক্ষাৎকারের এই পর্যায়ে সাংবাদিক যখন প্রশ্ন করেন—‘আপনি কি আসলে পুতিনের যুদ্ধ বলতে চাইছেন?’ নাভারো তখন স্পষ্ট করে বলেন, ‘না, এটা মোদির যুদ্ধ।’ তিনি আরও দাবি করেন, রাশিয়ার সস্তা তেল কিনে ভারত যেমন লাভবান হচ্ছে, তেমনি আমেরিকাকে ইউক্রেনের যুদ্ধ ব্যয় বহন করতে বাধ্য করছে।
ভারত অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দেশটি জানিয়েছে, ১. ৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য তারা যেখানেই সবচেয়ে কম দামে পাবে সেখান থেকেই তেল কিনবে এবং রাশিয়া থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাবে। বর্তমানে ভারতের অপরিশোধিত তেলের ৩৫–৪০ শতাংশই যায় রাশিয়া থেকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে যা ছিল ২ শতাংশেরও কম।
আমেরিকার নতুন শুল্ক নীতিতে ভারতের ৫৫ শতাংশেরও বেশি রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। টেক্সটাইল, গয়না ও শ্রমনির্ভর খাত সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে, যদিও ইলেকট্রনিকস ও ওষুধ সাময়িকভাবে ছাড় পেয়েছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের নীতি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভারত সব সময় রাশিয়া থেকে বিপুল অস্ত্র ও জ্বালানি কিনেছে। এখনো তারা বিশ্বের অন্যতম বড় ক্রেতা। তাই যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করছে।’
এদিকে রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় কুমার জানিয়েছেন, ‘ভারতের লক্ষ্য জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। রাশিয়া-ভারত সহযোগিতা বিশ্ব তেলবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সাহায্য করেছে।’
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন