ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি হানুক্কা উৎসব চলাকালে ভয়াবহ গুলিবর্ষণে এক হামলাকারীসহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পিতা-পুত্র কোন দেশ থেকে অভিবাসী হয়েছিলেন, তা এখনো গোপন রেখেছে অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ।
তবে নামের কারণে শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই সন্দেহ করেন—তারা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। অবশেষে মঙ্গলবার (১৬ই ডিসেম্বর) ভারতের তেলেঙ্গানা পুলিশের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, হামলাকারী সাজিদ আকরাম ও তার পুত্র নাভিদ আকরাম আসলে ভারতের হায়দরাবাদের বাসিন্দা!
হামলার সময় ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ৫০ বছর বয়সী সাজিদ আকরাম। আর তার ২৪ বছর বয়সী ছেলে নাভিদ আকরাম গুরুতর আহত অবস্থায় এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তেলেঙ্গানার পুলিশ মহাপরিচালক জানিয়েছেন, সাজিদ আকরাম হায়দরাবাদের বাসিন্দা ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন।
এরপর গত ২৭ বছর ধরে তিনি সেখানেই বসবাস করেছেন। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে তিনি ভারতে থাকা তার পরিবারের সঙ্গে খুব কমই যোগাযোগ রাখতেন। পুলিশ দাবি করেছে, সাজিদের কথিত উগ্রবাদী হওয়ার সঙ্গে ভারতের কোনো আদর্শিক বা সাংগঠনিক সংযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পুলিশ আরও জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে বহু বছর আগে হায়দরাবাদের আত্মীয়দের সঙ্গে সাজিদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি ২০১৭ সালে তার বাবার মৃত্যুর সময়ও তিনি জানাজায় অংশ নেননি। সর্বশেষ তিনি ২০২২ সালে হায়দরাবাদে গিয়েছিলেন।
সাজিদ আকরাম অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত ভেনেরা গ্রোসোকে বিয়ে করেন। পরিবারটি স্থায়ীভাবে সেখানেই বসবাস করছিল। তবে সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্টই বহাল রেখেছিলেন। আর তার ছেলে-মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়ায় তারা অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট বহন করেন।
বন্ডাই বিচে হামলার ঘটনাটিকে ‘ইসলামিক স্টেট অনুপ্রাণিত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট। তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বয়স বা শারীরিক সক্ষমতার তোয়াক্কা না করে শুধু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে আগ্রহী ছিলেন।
এদিকে হামলার এক মাস আগে সাজিদ ও তার ছেলে নাভিদ ফিলিপাইনের আইএস-অধ্যুষিত একটি অঞ্চলে ভ্রমণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। ফিলিপাইনের অভিবাসন দপ্তর জানিয়েছে, তারা গত ১লা নভেম্বর দেশটিতে প্রবেশ করে ২৮শে নভেম্বর ফিরে যান। অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষ এই সফরের উদ্দেশ্য ও গন্তব্য নিয়ে এখন তদন্ত চালাচ্ছে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন