ছবি: সংগৃহীত
আগামী ২০-২১শে ডিসেম্বর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলা। উন্নয়ন সংগঠন নাগরিক উদ্যোগ এবং বঞ্চিত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য গড়ে উঠা মহা প্রজ্ঞা এডুকেশন ট্রাস্ট-এর যৌথ আয়োজনে মিরপুর ১৩-তে অবস্থিত বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ প্রাঙ্গণে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আয়োজকদের পক্ষে রেলী চাকমা জানিয়েছেন, ফেসবুকে মেলার স্টল বরাদ্দের বিষয়টি প্রচার হওয়ার পর থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। পাবর্ত্য অঞ্চলের পাশাপাশি সমতলের মান্দি, মনিপুরী ও রাখাইনদের অনেক উদ্যোক্তা ইতোমধ্যেই স্টলের জন্য বুকিং দিয়েছেন।
জানা গেছে, আদিবাসীদের ঐতিহ্যমন্ডিত রন্ধন প্রণালির তেল ও মসলামুক্ত বিভিন্ন জনপ্রিয় খাবার নিয়ে অনেক স্টল থাকছে। থাকছে পাহাড়ের জনপ্রিয় ব্যাম্বু শুট, কলা পাতার রান্না করা বিভিন্ন পদের হেবাঙ। পাহাড়ী মুরগী ও কাপ্তাই হ্রদের মাছসহ নানান জুমিয়া সবজির মুখরোচক খাবার থাকছে।
এইছাড়াও পার্বত্য অঞ্চলের জনপ্রিয় খাবার পাজনের স্বাদ নিতে পারবেন মেলায় আগত দর্শনার্থীরা।
সমতলের আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় খাবারের পসরা সজিয়ে বসবেন মনিপুরী, গারো ও রাখাইনরা। কালো ও সাদা বিনি চাউলের বিভিন্ন প্রকার মুখরোচক পিঠা নিয়ে হাজির হচ্ছেন রাখাইন ভোজন রসিকরা। থাকছে হালনাগাদ বাঙালিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠা অনেক ধরনের মুন্ডি। এবারের মেলার বিশেষ অকর্ষণ থাকছে পাহাড়ের বাঁশের হুক্কা। যা বাঁশ দাবা নামে বেশি পরিচিত। থাকবে নানা প্রকার টাটকা ফলের ঝাল আইটেম। এই ঝাল আইটেম লাকসো নামে অধিক সমাদৃত। এছাড়াও শাকসবজি, ফলমূল, বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা জাতের কৃষিপণ্যের সমাহার এবং শুঁটকির পসরা নিয়ে অনেক উদ্যেক্তা উপস্থিত হবেন।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন জানান, দেশের শহুরে নাগরিক জনগোষ্ঠীকে আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় সমৃদ্ধ জুম কৃষির বিভিন্ন শস্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই মেলার আয়োজন।
আরও পড়ুন: রাস পূজা উদযাপনে কুয়াকাটায় তীর্থযাত্রীদের ঢল
তিনি বলেন, আদিবাসী উদ্যোক্তরা যেন বেশি বেশি ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে পারেন সেই তাগিদ থেকেই আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলা-২০২৪ আয়োজন করা হচ্ছে।
মেলার বিষয়ে মহা প্রজ্ঞা এডুকেশন ট্রাস্টের সদস্য ধীরেন মাহাতো বলেন, আমাদের দেশে বহুত্ববাদী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের সাথে দেশের বাঙালি জনগণের খাদ্যাভাসের মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য মেলার মাধ্যমে তারা সেই প্রয়াস চালাচ্ছেন। আয়োজকরা আশা করছেন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়াতে মেলায় ব্যাপক লোকজনের সমাগম হবে।
এবার মেলার পাশাপাশি ২০শে ডিসেম্বর শুক্রবার একটি মনোজ্ঞ আদিবাসী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাও দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন। সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আদিবাসী নারীদের জনপ্রিয় ব্যান্ড এফ মাইনরের সদস্যরা দর্শক মাতাবেন।
এসি/ আই.কে.জে/