বৃহস্পতিবার, ২৮শে আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলে কখন থেকে কার্যকর হবে—প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির *** শাহবাগে এসে শিক্ষার্থীদের কাছে ডিএমপি কমিশনারের ‘দুঃখ প্রকাশ’ *** ২৮ তারিখ নয়, রাকসুর ভোট গ্রহণ ২৫শে সেপ্টেম্বর *** গাজা যুদ্ধের কভারেজ নিয়ে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক ঘোষণা দিয়ে রয়টার্স ছাড়লেন *** ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ *** জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামা সংশোধন করবে কমিশন *** পান্নুন হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রে জড়িত ‘র’–এর সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দিল্লিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা *** বেসরকারি খাতে যাচ্ছে নগদ, এক সপ্তাহের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি: গভর্নর *** নেপালের বিপক্ষে এগিয়ে থেকে বিরতিতে বাংলাদেশ *** চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘিরে উসকানির চিহ্ন দেখামাত্র ব্যবস্থা নিতে তিন উপদেষ্টার নির্দেশ

গান গাইছে না নীল তিমিরা, যা বলছেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন, ৮ই আগস্ট ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাণী নীল তিমি, আগের মতো আর গান গাইছে না। এই নীরবতা বিজ্ঞানীদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে সমুদ্রের তলদেশে বসানো একটি হাইড্রোফোনে (ধ্বনি সংগ্রাহক যন্ত্র) ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নীল তিমির গানের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। খবর দ্য ইনডিপেনডেন্টের।

এই গবেষণা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে প্লস জার্নালে। এতে দেখা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে একটি অস্বাভাবিক সামুদ্রিক তাপপ্রবাহ শুরু হয়। বিজ্ঞানীরা এই তাপপ্রবাহের নাম দিয়েছেন ‘দ্য ব্লব’। এই ব্লব প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে সমুদ্রে ক্রিল নামে ক্ষুদ্র এক প্রজাতির চিংড়িসদৃশ প্রাণীর পরিমাণ নাটকীয়ভাবে কমে যায়। আর এই ক্রিলই নীল তিমির প্রধান খাদ্য।

‘দ্য ব্লব’ নামের তাপপ্রবাহটি প্রথমে বেরিং সাগর ও আলাস্কা উপকূল থেকে শুরু হয়ে উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূলে ধেয়ে এসেছিল। কিছু অঞ্চলে এটি সাগরের গড় তাপমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ৫ ফারেনহাইট বেশি ছিল। ২০১৬ সালের মধ্যে এই উষ্ণ জলরাশি প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় ২ হাজার মাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হয়।

এই অতিরিক্ত উষ্ণতা বিষাক্ত শৈবাল উৎপন্ন করে। এর ফলেই মূলত সমুদ্রের অন্য কিছু প্রাণীর সঙ্গে সঙ্গে ক্রিলের সংখ্যাও কমিয়ে দেয়। ফলে নীল তিমিরা পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। তারা আর আগের মতো গান গাইতে পারে না।

মন্টেরি বে অ্যাকুয়ারিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জীববিজ্ঞানী জন রায়ান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে বলেন, ক্ষুধার্ত অবস্থায় গান গাওয়া খুব কঠিন। তিমিরা তখন শুধুই খাবারের খোঁজে ছুটছে। গান গাওয়ার সময় বা শক্তি তাদের নেই।

গবেষণায় দেখা গেছে, ছয় বছরের মধ্যে তিমির গানের হার প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে। গবেষণার সহলেখক ও সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী কেলি বেনোয়া-বার্ড বলেন, এই উষ্ণ বছরগুলোতে শুধু তাপমাত্রাই নয়, পুরো সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র বদলে যায়। তখন ক্রিল জন্মায়নি। আর যারা শুধু ক্রিলের ওপর নির্ভর করে, তাদের সামনে কোনো পথ খোলা থাকে না।

পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলেই আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। কারণ, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের মহাসাগরগুলো ইতিমধ্যে অতিরিক্ত তাপের ৯০ শতাংশেরও বেশি শোষণ করছে। এর ফলে ক্রিলের মতো সূক্ষ্ম প্রাণীর বিলুপ্তি শুধু নীল তিমিই নয়, পুরো সামুদ্রিক খাদ্যচক্রকে বিপন্ন করে তুলছে। তিমিদের এই নীরবতা তাই শুধু একটি প্রজাতির দুর্ভোগ নয়—এটি সমুদ্রের গভীরে চলা এক মহাসংকটের স্পষ্ট ইঙ্গিত।

জে.এস/

তাপমাত্রা গবেষণা জলবায়ু পরিবর্তন নীল তিমি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন