ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবের শর্ত মেনে নিতে হামাসকে ‘শেষ সতর্কবার্তা’ দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শর্তগুলো মেনে না নিলে পরিণতি কী হবে, তা-ও সংগঠনটিকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের এমন হুঁশিয়ারির পর হামাস বলেছে, দ্রুত আলোচনার টেবিলে বসতে প্রস্তুত আছে তারা। খবর এএফপির।
গাজায় ২৩ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতে ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। সবশেষ হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে গাজায় বন্দী সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে তারা। তবে পরে ইসরায়েল এর সঙ্গে হামাসের অস্ত্রসমর্পণসহ আরও বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেয়।
তার পর থেকে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি থমকে ছিল। এর মধ্যে গত রোববার (৭ই সেপ্টেম্বর) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘ইসরায়েলিরা আমার শর্তগুলো মেনে নিয়েছেন। এখন হামাসেরও মেনে নেওয়ার সময়। মেনে না নিলে পরিণতি কী হবে, সে বিষয়ে হামাসকে আমি সতর্ক করেছি। এটি আমার শেষ সতর্কবার্তা।’
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের শর্তগুলো কী কী, তা খোলাসা করেননি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এর আগেও একাধিকবার আমেরিকার কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে, যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে নিয়েছে ইসরায়েল। তারপরও গাজায় ইসরায়েল হামলা বাড়িয়েছে বৈ কমায়নি। এমনকি আলোচনার মধ্যেই গত মাস থেকে গাজা নগরী দখলে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ট্রাম্পের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সম্পর্কে একটি ধারণা দিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। তাদের খবরে বলা হয়েছে, প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজায় বন্দী সব জিম্মিকে যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনেই মুক্তি দিতে হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী হাজার হাজার ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় ব্যাপক পরিসরে হামলা চালানো বন্ধ রাখবে ইসরায়েল। এ সময় ট্রাম্পের তত্ত্বাবধানে সংঘাত পুরোপুরি থামানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু করা হবে। ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় বর্তমানে ৫০ জন জিম্মি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হয়।
ট্রাম্পের এ প্রস্তাবের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি ইসরায়েল। তবে রোববার হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধের যেকোনো উদ্যোগকে স্বাগত জানায় হামাস। একই সঙ্গে গাজায় বন্দী সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত আলোচনার টেবিলে বসতে প্রস্তুত আছে তারা।
তবে এর বিনিময়ে গাজায় হামলা বন্ধের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনাকে সরিয়ে নিতে হবে। আর স্বাধীন ফিলিস্তিনিদের নিয়ে এমন একটি কমিটি গঠন করতে হবে, যারা সংঘাত শেষ হওয়ার পর দ্রুত গাজা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে পারবে।
এর আগেও একাধিকবার হামাসকে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। শিগগিরই সংঘাত শেষ হবে, এমন পূর্বাভাসও দিয়েছেন। গত ২৫শে আগস্ট তিনি বলেছিলেন যে তিন সপ্তাহের মধ্যে এই সংঘাত ‘চূড়ান্তভাবে শেষ’ হবে। এ ছাড়া ক্ষমতায় বসার পর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে সেখানে আমেরিকার মালিকানায় ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিনোদনকেন্দ্র’ গড়ে তোলার কথাও বলেছিলেন তিনি।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন