ছবি: সংগৃহীত
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, বাংলাদেশে যদি কিছু নেতা ভারতকে হুমকি দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলতে থাকেন, তবে নয়াদিল্লি আর বেশি দিন নিরব থাকবে না। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে সেটিকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার আহ্বান বারবার উঠে আসা বাংলাদেশের একটি খারাপ মানসিকতার প্রতিফলন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে এমন বক্তব্য আসছে যে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে তাদের সঙ্গে একীভূত করার কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের এমনটা কল্পনাও করা উচিত নয়। তাকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য হিন্দু।
এতে বলা হয়, ভারত একটি বড় দেশ, পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। এ কথা উল্লেখ করে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে একটি ভুল মানসিকতা তৈরি হয়েছে। তাদের সাহায্য করা আমাদের উচিত নয়। বরং পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া উচিত, এ ধরনের আচরণ ভারতের বিরুদ্ধে হলে আমরা নিরব থাকব না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার (১৫ই ডিসেম্বর) বাংলাদেশের এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ মন্তব্য করেন, ভারতের আটটি রাজ্য নিয়ে গঠিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত। তার প্রতিক্রিয়াতেই আসামের মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য।
হাসনাত আবদুল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমি ভারতকে বলতে চাই- আপনারা যদি আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকার মানে না এমন লোকদের আশ্রয় দিতে থাকেন, তবে আমরাও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে দেব।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থকদের বর্তমান বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে উসকে দিতে ভারত অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, এটাই প্রথম নয়, এর আগেও বাংলাদেশি নেতাদের কাছ থেকে এমন হুমকি এসেছে। এ বছরের শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ভারতের পূর্ব দিকের সাতটি রাজ্য একটি স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছানোর কোনো পথ নেই। সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক আমরা।
পরবর্তীতে বাংলাদেশি নেতাদের হুমকির ভাষা ‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডরের দিকে ঘুরে যায়, যা পশ্চিমবঙ্গের মাত্র ২২ থেকে ৩৫ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি অংশ এবং সেটা উত্তর-পূর্ব ভারতকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে যুক্ত করে।
এ প্রসঙ্গে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতকে হুমকি দেওয়ার আগে বাংলাদেশের উচিত তাদের নিজের দুটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ চিকেনস নেকের দিকে নজর দেওয়া। এর মধ্যে একটি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম গারো হিলস পর্যন্ত বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ। অন্যটি হলো দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম করিডর।
খবরটি শেয়ার করুন