ছবি : সংগৃহীত
ভোলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের সোনালি ধান দোল খাচ্ছে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আর তা দেখে কৃষকের মুখে সোনালি হাসি।
এছাড়া রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ার পাশাপাশি ফলন ভালো হওয়াতেও খুশি তারা। আবাদের খরচ মিটিয়ে বিগত দিনের ধারদেনাও শোধ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। ধান পাকতে শুরু করায় কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা।
ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ি) তথ্যমতে, ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা মিলিয়ে মোট ৭ উপজেলায় কৃষকের সংখ্যা ৪ লাখ ২৮ হাজার। তার মধ্যে আমন আবাদ করেছেন ৪ লাখ ২৫ হাজার। চলতি বছর ভোলার সাত উপজেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭৬ হেক্টর। আমনের চারা পঁচে যাওয়ায় আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে। অনাবাদি আছে ৩ হাজার ৯৭৬ হেক্টর জমি।
এর আগে আগস্ট মাসে অতিবৃষ্টি ও অতিজোয়ারের পানিতে দুই দফায় ১২ হাজার ৩৪১ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার ভেতর ৩ হাজার ৪১১ হেক্টর আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এতে আমনের চারা সংকটে জেলাজুড়ে ১৯ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা ছিল।
আরো পড়ুন : কুয়াশায় শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
সরেজমিনে ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলার আমন ধানের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ব্রি ৫২, বিআর ২২, ২৩, স্বর্ণা, বিনা ১৭, ২০, ব্রি-৬৬, ৭০, ৭৮, ১০৩ সহ বেশ কয়েকটি আমনের জাত রয়েছে কৃষকের জমিতে। এ বছর ধানের দাম বৃদ্ধি ও ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা। ইতোমধ্যে অনেকে তাদের জমির পাকা ধান কেটে নিয়েছেন। আবার অনেকে ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা তাদের।
ভোলার দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের কৃষক মো. মোসলেউদ্দিন ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, সমিতি থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ক্ষেতে (জমি) আমন ধানের চারা লাগিয়েছি। জোয়ার ও বৃষ্টির পানি জমে আগস্ট মাসে ২ বার আমনের চারা পচে গেছে। এতে সমিতি থেকে নেওয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধ নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পরে আবার টাকা ধার করে ঝুঁকি নিয়ে ক্ষেতে আবারও ধানের চারা লাগিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ ধান ভালো হয়েছে। আর কদিন পরেই কাটব। সবমিলিয়ে খরচাপাতি উঠে লাভ থাকবে।
ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের কৃষক রিয়াজ মাল বলেন, এ বছর ৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে ১ হেক্টরের ধান, প্রায়ই ১২ মন ধান পেয়েছি। ক্ষেত থেকেই ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আবাদের হিসেবে এ বছর লাভবান হব।
ধানের ব্যাপারী মো. মিজান বলেন, সরাসরি কৃষকের জমি থেকে ১০৭০ থেকে ১১০০ টাকা মণে আমন ধান কিনছি। পরে আমি আবার মণ প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা লাভে আড়তদারের কাছে বিক্রি করি।
এস/ আই.কে.জে