ছবি : সংগৃহীত
আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ওজন কমানোর মূলমন্ত্র কী? এই প্রশ্নের উত্তরে সাধারণভাবে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ আর শরীরচর্চার কথাই বলবেন নিশ্চয়ই। তবে বাস্তবতা হলো ওজন কমানো ও স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখার সঙ্গে এই দুটি বিষয়ের বাইরেও জীবনধারার নানা দিক জড়িয়ে থাকে। মনের ব্যাপারটাই যেমন। রাজ্যের যত চাপ কিংবা বিষণ্নতার বিশাল বোঝা নিয়ে কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই ওজন কমাতে চাইলে চাপমুক্ত থাকুন, মন ভালো রাখুন।
বাড়তি ওজনের জন্য সামাজিক পরিসরে অনেককেই কটু কথা শুনতে হয়। এ থেকেই সৃষ্টি হতে পারে বিষণ্নতা। ওজন ছাড়া ব্যক্তিগত জীবনের অনেক বিষয় নিয়ে আপনি বিষণ্নতা বা হতাশায় ভুগতে পারেন। বিষণ্নতা বা হতাশার কারণ যেটিই হোক, এমন সমস্যায় ভুগলে মন ভালো করার চেষ্টায় অনেকেই বাড়তি ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলেন। অর্থাৎ বিষণ্নতা বা হতাশা পরোক্ষভাবে আপনার বাড়তি ওজনের জন্য দায়ী হতে পারে। আর ওজন কমানোর প্রচেষ্টার শুরুতেও আপনি কেবল এই একটি কারণেই পিছিয়ে পড়তে পারেন। একইভাবে মানসিক চাপ সামলানোর জন্যও উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন মজাদার খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, মন ভালো থাকলেই ওজন কিভাবে কমবে?
প্রশান্তি হারিয়ে
সামাজিক জীবনের জটিল সমীকরণে পড়ে কেউ কেউ নিজেকে অযোগ্য মনে করেন। এই সমাজে এমন বহু মানুষ আছেন, যারা আপনার ওজন, চেহারা, একাডেমিক ফলাফল, চাকরি, বিয়ে, সন্তান—এমন বহু বিষয় নিয়ে আপনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারেন। তাদের কথায় হীনম্মন্যতায় ভুগতে পারেন আপনি। মেজাজও বিগড়ে যেতে পারে সহজেই। মোটকথা, প্রশান্তিদায়ক একটা জীবনভাবনা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়তে পারেন। অতিরিক্ত চাপেও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অফিসের সহকর্মী বা বস কিংবা জীবনসঙ্গী বা পরিবারের অন্য সদস্যের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক থেকে মানসিক চাপ বাড়ে। মনমেজাজ খারাপ থাকলে মন ভালো করার জন্য ক্যালরির দিকে খেয়াল না রেখেই অতিরিক্ত খেয়ে ফেলতে পারেন আপনি। মনমেজাজ ভালো না থাকলে শরীরচর্চার উৎসাহও হারিয়ে যায়। সব মিলিয়ে বাড়তে পারে ওজন।
আরো পড়ুন : ২০২৫ সালের রঙ কোনটি জানেন?
প্রথমে নিজেকে জানুন
ওজন আপনি নিশ্চয়ই নিয়ন্ত্রণ করবেন, তবে তার আগে নিজেকে জানুন। লোকের কথায় কান দেবেন না। কোন গুণটি নিয়ে আপনি এই পৃথিবীতে এসেছেন, তা আপনিই সবচেয়ে ভালো জানেন। আপনি তো জানেন, আপনি কে, কিসে আপনার ভালো লাগে। সেই ভালো লাগাটিকে গুরুত্ব দিন। অন্যের কথায় প্রভাবিত হয়ে নিজের সন্তান কিংবা পরিবারের অন্য কারও প্রতি কোনো নির্দেশনা চাপিয়ে দেবেন না। তাদের ভালো লাগা, ভালো থাকার প্রতিও গুরুত্ব দিন। তাতে আপনার পারিবারিক জীবনে চাপ কমবে।
ওজন কমাতে
কারও কটু কথার পরিপ্রেক্ষিতে ওজন কমানোর চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই। ওজন কমান নিজের ভালো থাকার জন্য। অন্যের কথাকে চাপ হিসেবে নেবেন না।
ওজন কমাতে গিয়ে নিজেকে সব ধরনের ভালো স্বাদ থেকে বঞ্চিত করার প্রয়োজন নেই। নিজের প্রতি অতিরিক্ত কঠোরতা কিন্তু ভালো নয়। আপনি যখন ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, চাইলে তখনো সপ্তাহে একবার পছন্দের কোনো উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। একেবারে সব সুস্বাদু খাবার বাদ দিয়ে সারা সপ্তাহ কেবল সবজি সেদ্ধ খেতে হবে, ব্যাপারটা কিন্তু তেমনও নয়। সপ্তাহজুড়ে কম ক্যালরির যেসব খাবার খাবেন, সেগুলোতেও আনতে পারেন বৈচিত্র্য। নানা ধরনের মসলা বা পাতা যোগ করতে পারেন সেসব খাবারের স্বাদ বাড়াতে।
শরীরচর্চার সময় পছন্দের অডিও ক্লিপ শুনতে পারেন। চাইলে বন্ধু বা পরিবারের কারও সঙ্গে একই সময়ে শরীরচর্চা করতে পারেন।
চাপ সামলানোর ও মন ভালো রাখার কৌশলগুলো আয়ত্ত করুন। যেসব কাজে মন ভালো হয়, সেগুলোর চর্চা করুন। প্রতিদিন নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখুন। রোজ রাতে ভালো ঘুমও হওয়া চাই।
এস/ আই.কে.জে/