ছবি: সংগৃহীত
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী প্রমুখ নেতারাও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট সৃষ্টিতে অবদান রেখেছেন। তবে এতে সবচেয়ে মুখ্য ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছিলেন এর মূল স্ট্রাইকার।
মন্ত্রী বুধবার (২৭শে মার্চ) রাজধানীর মতিঝিলে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিভিন্ন নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি কোনো অন্যায় ও সহিংস পথ অবলম্বন করেননি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ধাপে ধাপে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন যথাক্রমে ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ‘৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ‘৭০ এর নির্বাচন ও সবশেষে ‘৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা শুধু নয় মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি। এটি ছিল দীর্ঘ ২৪ বছরের বিভিন্ন নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল একটি জনযুদ্ধ।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন পুরোদস্তুর একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি মানুষকে পড়তে পারতেন এবং তাদের হৃদয়ের ভাষা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারতেন। মানুষকে একত্রিত ও সংগঠিত করার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তার। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতেন এবং তাদের দুঃখকষ্টে পাশে দাঁড়াতেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, পিতার কাছ থেকে নেতৃত্বের সব গুণাবলি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বড় মেয়ে বলে পিতার বেশি সান্নিধ্য ও আদর পেয়েছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশা, বিপদে-আপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো, দলের নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেয়া প্রভৃতি মানবিক গুণাবলি তিনি বঙ্গবন্ধুর নিকট থেকে শিখেছেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে সভায় মুখ্য আলোচক হিসাবে বক্তৃতা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর এর সদস্য সচিব ও কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান।
আরও পড়ুন: ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনকারীরা বউদের শাড়িগুলো পুড়াচ্ছেন না কেন’
খোকা থেকে জাতির পিতায় রূপান্তরের ইতিহাস বর্ণনা করে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এর কিউরেটর সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, বঙ্গবন্ধুই প্রথম রাজনৈতিক নেতা যিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে মিশেছিলেন, তাদের কাছে ক্ষমতা নিয়ে গিয়েছিলেন। যে কারণে তিনি এদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, মজুরের নেতা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, স্বাধীনতা মানে শুধু দেশ ও জাতি স্বাধীন হওয়া নয়। এর তাৎপর্য আমাদের গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে। তিনি বলেন, শুধু দিবস পালনে সীমাবদ্ধ না থেকে স্বাধীনতার মর্মার্থ ও তাৎপর্য আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
আলোচনা সভায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধানগণ সহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, মন্ত্রী এর পূর্বে ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর তিনি মন্ত্রণালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্নার পরিদর্শন করেন এবং পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের নিম্ন বেতনভোগী কর্মচারীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
এসকে/এএম/
খবরটি শেয়ার করুন