শুক্রবার, ১০ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** থেমেছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান–কামানের গর্জন, ২ বছর পর শান্তির ঘুমে গাজাবাসী *** জামায়াতে ৪৩ শতাংশ নারী—এটা খুশির খবর, কিন্তু তাদের দেখা যায় না: শারমীন মুরশিদ *** তহবিলসংকটের কারণে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী কমাচ্ছে জাতিসংঘ *** খালেদা জিয়ার সেফ এক্সিটের দরকার পড়েনি: রিজভী *** পক্ষপাতের জন্য গণমাধ্যম মালিক-সম্পাদকদের ক্ষমা চাওয়া উচিত: উপদেষ্টা মাহফুজ *** শাপলা না দিলে ধানের শীষ বাতিল করতে হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী *** শহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দী করেছে ইসরায়েল *** সরিয়ে নেওয়া হলো এনবিআরের সদস্য সেই বেলাল চৌধুরীকে *** গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসরায়েল *** জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর হবে ১৫ই অক্টোবর

দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েই চলেছে, দ্রুত লাগাম টানতে হবে

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০১:৪৩ অপরাহ্ন, ১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫

#

ছবি - সংগৃহীত

বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন। সামনের দিনগুলোতে আরো প্রায় এক কোটি মানুষ দরিদ্র হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এর প্রধানত কারণ উচ্চ মূল্যস্ফীতি। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। মূল্যস্ফীতি ও মজুরি বৃদ্ধির কারণে দারিদ্র্যের সংখ্যা বেড়েই চলছে।

বেসরকারি সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‍্যাপিড) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (২০২২-২৪) তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলেছে,নতুন করে ৭৮ লাখ ৬০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন। এর মধ্যে ৩৮ লাখ ২০ হাজার মানুষ দরিদ্র থেকে হতদরিদ্র হয়েছেন। আর দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন আরো ৯৮ লাখ ২০ হাজার মানুষ।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর বিশ্বজুড়ে দ্রব্যমূল্য বাড়তে শুরু করে। এরপর থেকে বাংলাদেশে আমদানি খরচ বেড়ে যায় এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যায়। যার কারণে মার্কিন ডলারের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পায়। তখন ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা, এখন ১২০ টাকার বেশি।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর আরেক দফা ডলারের দাম বেড়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে  মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, গত নভেম্বর মাস থেকে  সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অংকে পৌঁছেছে। বর্তমানে মুদ্রাস্থিতি ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে উঠেছে। অর্থাৎ গতবছর এই সময়ে ১০০ টাকায় যে পণ্য ও সেবা কেনা গেছে, বর্তমান সময়ে একই পরিমাণ পণ্য ও সেবা কিনতে ভোক্তাকে ১১১ টাকা ৩৮ পয়সা খরচ করতে হচ্ছে। এছাড়া খাদ্য মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি আরো নাজুক, যা বেড়ে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, দেশে গত বছরের তুলনায় দারিদ্র্যের হার বেড়ে গেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর শহর এলাকায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে বলা হয়েছে,দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে, ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ; আর সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ, ঢাকা বিভাগে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। ঢাকা, সিলেট, রংপুর, খুলনা বিভাগে দারিদ্র্য বেড়েছে।

দারিদ্র্য রোধ করতে সামাজিক কর্মসূচির উপর জোর দিতে হবে। খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ), ভালনারেবল ওমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি), বিধবা ভাতা এবং নারী ও শিশুদের সুরক্ষা এই ৯টি কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।

বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ  টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্থাৎ অতি দারিদ্র্য বিদায় করতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু  দেশে শ্রেণিবৈষম্য বাড়ছে, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান ক্রমেই বেড়ে চলছে। সরকারকে দারিদ্র্য বিমোচন করতে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। বেসরকারি কর্মসংস্থানে গতি আনতে হবে। মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানতে হবে। তাহলেই দারিদ্র্য কমে আসবে।

আই.কে.জে/

দারিদ্র্যের হার

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250