ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর এবিসি নেটওয়ার্কের জনপ্রিয় টক শো হোস্ট জিমি কিমেলের অনুষ্ঠান ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিমেল রক্ষণশীল ইনফ্লুয়েন্সার চার্লি কার্কের হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। এর জেরেই এমন পদক্ষেপ।
গত সোমবার (১৫ই সেপ্টেম্বর) কিমেল তার অনুষ্ঠানে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, চার্লি কার্কের হত্যাকারী একজন ‘মাগা রিপাবলিকান’। যদিও উটাহ কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ‘বামপন্থী মতাদর্শে দীক্ষিত’।
ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি) কিমেলের মন্তব্যের জেরে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর এবিসি চ্যানেল ‘জিমি কিমেল লাইভ!’ অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়।
ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ই সেপ্টেম্বর) ব্রিটেন থেকে ফিরে আসার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ান-এ সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোথাও পড়েছি যে, নেটওয়ার্কগুলো আমার বিরুদ্ধে ৯৭ শতাংশ নেতিবাচক প্রচারণা করেছে, এরপরেও আমি জিতেছি এবং সহজেই সাতটি সুইং স্টেটে জিতেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাকে শুধু খারাপ প্রচারণা দেয়। আমার মনে হয়, তাদের লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া উচিত।’
কিমেলের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা এবং স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ডের মতো হলিউড ইউনিয়নগুলো এই ঘটনা বাক্স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে। অন্যদিকে, বারস্টুল স্পোর্টসের প্রতিষ্ঠাতা ডেভ পোর্টনয়-এর মতো অনেকে এটিকে ‘দায়বদ্ধতা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি কোনোভাবেই ‘ক্যানসেল কালচার’ নয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, অভিনেতা বেন স্টিলার এবং জ্যঁ স্মার্তের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা কিমেলের অনুষ্ঠান বন্ধের নিন্দা জানিয়েছেন। ওবামা বলেছেন, এই ঘটনা ‘ক্যানসেল কালচার’-এর এক নতুন এবং বিপজ্জনক স্তর প্রকাশ করেছে। তিনি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে বলেন, বর্তমান প্রশাসন তাদের অপছন্দের সাংবাদিক এবং সমালোচকদের চুপ করানোর জন্য বা বরখাস্ত করার জন্য নিয়মিত মিডিয়া সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রক পর্যায়ে পদক্ষেপের হুমকি দিয়ে আসছে।
কিমেলের প্রতিদ্বন্দ্বী নেটওয়ার্কগুলোর লেট নাইট শো-এর হোস্টরাও তার সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। সিবিএস-এর স্টিফেন কোলবার্ট এই ঘটনাকে ‘স্পষ্ট সেন্সরশিপ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘একজন স্বৈরাচারকে আপনি এক ইঞ্চিও ছাড় দিতে পারেন না।’
অন্যদিকে, এফসিসি-এর চেয়ারম্যান ব্রেন্ডান কার বলেন, কিমেলের অনুষ্ঠান বাতিলই ‘শেষ পদক্ষেপ নয়’। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এসব সম্প্রচারকারীকে জনস্বার্থে জবাবদিহি করতে বাধ্য করব।’ তিনি নেক্সস্টার মিডিয়ারও প্রশংসা করেছেন। কারণ তারা কিমেলের মন্তব্যকে ‘আপত্তিকর এবং অসংবেদনশীল’ বলে বর্ণনা করে তার অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন