শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে রেলপথের সুফল পেতে যাচ্ছে ঝালকাঠিবাসী

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৩১ অপরাহ্ন, ৫ই মে ২০২৪

#

প্রতীকী ছবি

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রেল যোগাযোগের সুবিধা পেতে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণের বিভাগ বরিশাল অঞ্চলের মানুষ। পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলকে রেলে যুক্ত করার কাজ চলছে পুরোদমে। তবে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৮ সাল পর্যন্ত। ঢাকা থেকে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা রুটে থাকছে ১২টি রেলওয়ে স্টেশন। 

ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভরতকাঠি গ্রামে ইলিশ মাছের আদলে দৃষ্টিনন্দন নকশায় এখানকার একমাত্র রেলওয়ে স্টেশনটি হবে। এরই মধ্যে স্টেশনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে সরকার। সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে এরই মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পায়রা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজ চলমান আছে। এর ধারাবাহিকতায় রেলপথ মন্ত্রণালয় ভাঙ্গা থেকে বরিশাল এবং পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেলের জন্য বিশদ নকশা ও টেন্ডার ডকুমেন্ট প্রস্তুতির পাশাপাশি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য ম্যাপ চূড়ান্ত করে অনেক আগেই তিনটি সার্ভে কোম্পানি জরিপ কাজ সম্পন্ন করেছে। ম্যাপ অনুযায়ী মাটি পরীক্ষা, জমি, ঘরবাড়ি, স্থাপনা এবং গাছপালার জরিপ কাজও সম্পন্ন হয়েছে। ফরিদপুর-বরিশাল-পায়রা বন্দর-কুয়াকাটা রেললাইন প্রকল্পটির বাস্তব অবকাঠামো নির্মাণকাজ সঠিক সময়ে সম্পন্ন হলে ২০২৮ সালে এই রুটে ট্রেন চালু করতে আশাবাদী রেলপথ বিভাগ।

বরিশাল ও পটুয়াখালী দুই জেলার মাঝে শুধু ট্রেন থামবে নলছিটির ভরতকাঠীতে। এই রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঝালকাঠির মানুষ রাজধানী ঢাকায় ও পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর এবং পর্যটন নগরী সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায় যাতায়াত করতে পারবেন।

বেসরকারি সংগঠন ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই অঞ্চলে রেলপথ তৈরি হলে মানুষ বাসের যাত্রী হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে। পাশাপাশি ভ্রমণে ব্যয় কমবে।’

একাধিক কারিগরি বিশেষজ্ঞের ভাষ্য, আগামী দুই বছরের মধ্যে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল সেকশনের ৯৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ সম্পন্ন করে ট্রেন চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্টসের সিনিয়র কনসালটেন্ট আখতারুল ইসলাম খান ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট আহসান আলী জহিরসহ রেলপথ অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, এই রেলপথ নির্মাণে পাঁচ হাজার ৬৩৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। কিছু জায়গায় জটিলতা থাকায় ভূমি অধিগ্রহণ কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই ধরনের জটিলতা থাকলে ৪১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ২১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কার্যক্রম বিলম্বিত হতে পারে। বিলম্ব যত হবে এই প্রকল্পের ব্যয় ততই বাড়বে।

আরো পড়ুন: সুন্দরবনের আগুন নেভাতে নৌ ও বিমান বাহিনী যোগ দিয়েছে

ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্টসের জুনিয়র কনসালটেন্ট আহসান আলী জহির গণমাধ্যমকে বলেন, ভাঙ্গা থেকে পায়রা পর্যন্ত ২১১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে, যে রেলপথ ৩২৮ ফুট প্রশস্ত জায়গার মাঝখান দিয়ে নির্মাণ করা হবে।

‘প্রথম পর্যায়ে রেলপথটি হবে সিঙ্গেল লেনের, তবে ৩২৮ ফুট বা ১০০ মিটার প্রশস্ত জায়গা থাকায় পরবর্তী সময়ে এখানে ডাবল লেনের রেলপথ তৈরি করা যাবে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে না।’

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কনসালটেন্ট আখতারুজ্জামানের ভাষ্য, রেলপথ নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলাদাভাবে মতবিনিময় করা হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণ, মাঠপর্যায়ে জরিপ ও সব আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

আখতারুজ্জামান বলেন, এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, তবে রেলপথ নির্মাণের জন্য এখনও দুটি স্টাডি বাকি আছে, যা রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ তিনটি দেশি ও বিদেশি সহযোগী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করছে। সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রকল্প বাস্তবায়নে পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।

এইচআ/ আই.কে.জে/ 

ঝালকাঠি রেলযোগাযোগ

খবরটি শেয়ার করুন