ছবি: সংগৃহীত
জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরতে পারলে পুরস্কার পাবেন। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফের এই ঘোষণা অনুযায়ী পুরস্কারের আশায় জীবিত রাসেলস ভাইপার ধরলেন রেজাউল খান নামে এক কৃষক। সাপ নিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে হাজির হয়েছেন তিনি।
শনিবার (২২শে জুন) সন্ধ্যায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের সামনে জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ দেখান। রেজাউল খান সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের সাইনবোর্ড এলাকার মনোরুদ্দিন খানের ছেলে।
রেজাউল খান গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার বিকেলে মাছ ধরতে গিয়ে এই সাপটি দেখতে পাই। পরে তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে সাপটিকে ধরে ফেলি। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় সাপটিকে পাতিলে রেখে দেই। এরপর প্লাস্টিকের নেটের আবরণ দিয়ে পাতিলের মুখ বন্ধ করে দিয়ে নিয়ে আসি। দুদিন আগেও একটি রাসেল ভাইপার সাপ মেরেছি আমি।
আরো পড়ুন: এবার প্রেমের টানে বাংলাদেশে চীনা যুবক, মুসলিম রীতিতে বিয়ে
তিনি বলেন, স্থানীয় মুরব্বিদের কাছে জেনেছি, জীবিত রাসেল ভাইপার সাপ ধরতে পারলে ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের নেতারা পুরস্কার দেবেন। সেজন্যই জীবিত ধরেছি। সাপ বাচ্চা হোক আর পূর্ণবয়ষ্ক হোক বিষ কিন্তু একই থাকে, সেটা জানেন কিনা এমন প্রশ্ন করলে রেজাউল বলেন, তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে নিয়েছিলাম তো।
পৌরসভার স্থানীয় ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ আওয়াল হোসেন তনু গণমাধ্যমকে বলেন, কৃষক রেজাউল খান রাসেল ভাইপার ধরে নিয়ে আসেন। সে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ঘোষিত পুরস্কারের দাবিদার। আমি তাকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে প্রেস ক্লাবে এবং পরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। বন কর্মকর্তারা যদি প্রমাণ করেন এটা রাসেলস ভাইপার তাহলে পুরস্কার দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ গণমাধ্যমকে বলেন, ওরা সাপ নিয়ে আসছিল। ওদের ওই সাপটি নিয়ে বন বিভাগে জমা দিতে বলেছি, সাপটি সত্যিই রাসেল ভাইপার হলে আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে।
ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, এই ধরনের পুরস্কার ঘোষণা করাই তো অবৈধ। মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। আমরা এটা প্রমাণ করতে যাব কেন? ওই কৃষকের উচিত হবে যেখান থেকে সাপটি ধরেছে ওই স্থানে ছেড়ে দেওয়া।
এর আগে গত ২০শে জুন জেলা আওয়ামী লীগের এক বৈঠকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন। সেই ভিডিও এবং সংবাদ প্রচার হলে একদিন পরেই সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন ইশতিয়াক আরিফ।
পরের দিন ২১শে জুন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলি আশরাফ পিয়ারের স্বাক্ষরিত এক সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ জীবিত ধরতে পারেন তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আগের বক্তব্যটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিকৃত করে প্রকাশ হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এইচআ/