ছবি: সংগৃহীত
নির্মাণকালীন স্থাপত্য শৈলীর বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখে নতুন রূপে ধরা দিলো চারশ বছরের পুরনো ‘ঢাকা গেট’। যা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের।
অযত্নে-অবহেলায় ধ্বংসপ্রায় সব স্থাপনাকে সংস্কারের দাবি ছিলো ঢাকাবাসীর। আর পর্যায়ক্রমে সব প্রত্নতাত্নিক নির্দশনের মৌলিকত্ব অক্ষুণ্ন রেখে সংস্কারের ফলে এসব স্থাপনা বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান করে নেবে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসসিসি গেটটির সংস্কার কাজ শেষে বুধবার (২৪শে জানুয়ারি) সবার জন্য খুলে দিয়েছে। এদিন দোয়েল চত্বর সংলগ্ন ঢাকা গেটের সংস্কার শেষে উদ্বোধন করেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান প্রমুখ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪শে মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিন নেতার মাজার সংলগ্ন এই ঢাকা গেট বা ঢাকা ফটকের সংস্কার কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
ঢাকা ফটকের (বাংলার সুবেদার মীর জুমলা ফটক) সংস্কার কাজ করছে মূলত ডিএসসিসির প্রকৌশল বিভাগ। সংস্কার ও সংরক্ষণের পাশাপাশি এখানে করা হয়েছে নান্দনিক চত্বরও। এছাড়া রাখা হয়েছে ইতিহাস সম্বলিত ফলক, বসার স্থান এবং নান্দনিক বাতি।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
কখনো রমনা গেট আবার কখনো ময়মনসিংহ গেট নামে পরিচিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর এলাকার তিন নেতার মাজার সংলগ্ন মুগল স্থাপত্যের গৌরবোজ্জল নির্দশন- ঢাকা গেট। মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে বাংলার সুবাদার মীর জুমলা মধ্যে ঢাকার সীমানা চিহ্নিত করার পাশাপাশি শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ১৬৬০ সালের দিকে নির্মাণ করেছিলেন এই গেটটি।
পরে কখনো ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের ফলে তিনটি অংশে বিছিন্ন হয়ে যায় ঢাকার গোড়াপত্তনের ইতিহাসের সঙ্গে নিবীড়ভাবে জড়িয়ে থাকা এই ঐতিহ্যের স্মারক। চারশ বছরে ধীরে ধীরে বুরুজের চূড়ায় থাকা কলস ভেঙে যায়। দীর্ঘদিন অযত্ন-অবহেলায় জৌলুস হারিয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যায় এ গেট।
তবে গত বছর ঢাকা গেটকে মুগল শান-শওকতে ফিরিয়ে আনতে সংস্কার কাজে হাত দেয় সিটি করপোরেশন। নির্মাণকালীন স্থাপত্যশৈলীর মৌলিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখে চলে সংস্কার কাজ। তাতে যুক্ত করা হয় গেট নিমার্তা মীর জুমলার আসাম যুদ্ধে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক কামানটি। দীর্ঘদিন পরে স্বরুপে ফিরে আসা নয়নাভিরাম এই স্থাপত্য নজর কেড়েছে দর্শনার্থীদের। আছে বসার স্থান। এই গেটের মতো ঢাকার ধ্বংসপ্রায় সব স্থাপনাকে সংস্কার করে আগের রুপে ফিরিয়ে দাবির নগরবাসীর কণ্ঠে।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন