শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিশুদের মোবাইল আসক্তি যেভাবে কমাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৫৪ অপরাহ্ন, ২৪শে জানুয়ারী ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

অনেকেই আমরা বাচ্চাকে শান্ত রাখার জন্য হাতে স্মার্টফোন বা ট্যাব তুলে দেই। গান, কার্টুন বা মজার ভিডিও চালিয়ে দিয়ে তাকে শান্ত রাখা হয়। আবার স্কুল, কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাসের কারণে বাধ্য হয়ে শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেই। দিনের বেশিরভাগ সময় শিশুদের হাতে স্মার্টফোন থাকায় তা আসক্তিতে রূপ নিয়েছে। যে কারণে শিশুদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে নানাবিধ বিরূপ মনোভাব। এমনকি অল্প বয়সেই তারা অ্যাডাল্ট বিভিন্ন কনটেন্ট দ্বারা উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এভাবেই শিশুরা মোবাইলে অ্যাপসগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়ে যাচ্ছে এবং বিপজ্জনক সাইটেও ঢুকে পড়ছে।

অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মোবাইল ফোনের বিকিরণ থেকে চোখের নানা রোগে আক্রান্ত হয় শিশুরা।

স্মার্টফোন তথা ইন্টারনেট আসক্তি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দেয়। একটু বড় হলে এদের বেশিরভাগই মানুষের সঙ্গে মিশতে চাইবে না। বাইরে খেলাধুলার পরিবর্তে ঘরে বসে ভিডিও গেম খেলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। আস্তে আস্তে একাকীত্ব পেয়ে বসবে তাদের। পরিবার থেকে একটু সচেতন থাকলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। শিশুদের স্মার্টফোন আসক্তি কমাতে কয়েকটি উপায় মেনে চলতে পারেন। চলুন সেসব উপায়গুলো জেনে নেই-

সময় দিন

বর্তমানে বেশিরভাগ বাবা-মা কর্মজীবী। ব্যস্ততার কারণে তারা সন্তানদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন না। এসময় শিশুরা নিজেদের সময় কাটাতে মোবাইলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। আর এটা দিন দিন আসক্তিতে পরিণত হচ্ছে। শিশুর আসক্তি দূর করতে আপনাকে সময় দিতে হবে। প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে অল্প সময়ের জন্য হলেও, একটা নির্দিষ্ট সময় রাখুন তাদের জন্য।

শিশুর মন ভালো রাখাতে তার সঙ্গে গল্প ও খেলাধুলা করতে পারেন। আবার মাঝে মধ্যে বাইরে ঘুরিয়ে নিয়ে আসুন। এছাড়া পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ,গান,ছবি আঁকা, খেলাধুলো ইত্যাদি কাজে আগ্রহ থাকলে তাতে উৎসাহ দিন। এগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে শিশুর মোবাইলের প্রতি আসক্তি অনেক কমে আসবে।

আরো পড়ুন : শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে তিন খাবার

শিশুর সামনে স্মার্টফোন কম ব্যবহার করুন

শিশুর সামনে প্রয়োজন ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন না। শিশুরা বড়দের দেখে শেখে। কারণ তারা অনুকরণপ্রিয়। শিশুরা যদি দেখে আপনি সারাক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। তাহলে তারাও তাই করবে। খুব প্রয়োজন হলে আলাদা রুমে গিয়ে স্মার্টফোন ব্যবহার করুন।

সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন

আপনার শিশুকে সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিতে পারেন। যেমন- গাছ লাগানো, পাখিকে খাবার খাওয়ানো, কবুতর/পাখি পোষা, কাগজ দিয়ে নানা ধরণের জিনিসপত্র বানানো। এসব কাজে শিশুরা মজা পেলে মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে দূরে থাকবে।

ঘরের কাজে অভ্যস্ত করুন

শিশুদের ঘরের কাজে ব্যস্ত রাখতে পারেন। বিশেষ করে মায়েরা এ কাজটি করতে পারেন। আপনার সন্তানকে বলতে পারেন, আজকে তুমি আমাকে কাজে সহযোগিতা করো। এতে আপনার সন্তান ঘরের কাজের প্রতি আগ্রহী হবে এবং মোবাইল আসক্তি থেকে সরে আসবে।

লাইব্রেরি তৈরি করুন

শিশুদের ঘরে অবশ্যই মিনি লাইব্রেরি তৈরি করা উচিত। অবসর সময়ে অভিভাবকের বই পড়ার অভ্যাস থাকলে সন্তানও তা রপ্ত করবে। অথবা খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস করুন, আপনাকে দেখেই তার মধ্যে এই অভ্যাসগুলো গড়ে উঠবে।

নির্দিষ্ট কাজে মোবাইল ব্যবহার

এখন মাঝে মধ্যেই শিশুকে অনলাইনে ক্লাস করতে হয়। সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। স্মার্টফোন থেকে আপত্তিকর ওয়েবসাইটগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শিশুরা যেন, মোবাইল থেকে শিক্ষামূলক ও তথ্যমূলক জিনিসই দেখে।

এছাড়া আপনার সন্তানকে প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দিকগুলো সম্পর্কে জানান। এর অতিরিক্ত ব্যবহার কী কী বিপদের কারণ হতে পারে তা নিয়ে সতর্ক করুন।

এস/  আই.কে.জে

মোবাইল শিশু

খবরটি শেয়ার করুন