ছবি: সংগৃহীত
গত বছর আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলার আসামি ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি। তবে সম্প্রতি বরিশাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নয়ন দাবি করেন, আন্দোলনের সময় ছাত্রদের নগ্ন ভিডিও করে রাখতেন তৌহিদ আফ্রিদি।
এমন খবর দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এই নিয়ে ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানামুখী আলোচনা। নানা চিন্তা ও মতাদর্শের নেটিজেনরা মতামত প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ বলছেন, শুধু শিক্ষার্থী নয়, কোনো কোনো অভিভাবকেরও নগ্ন ভিডিও ধারণ করেছেন তৌহিদ আফ্রিদি।
কালের কণ্ঠের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইনজীবী নয়ন আদালতে বলেন, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে দীর্ঘদিন পুলিশ খুঁজছে। সম্প্রতি বরিশালে তাকে পেয়েছে সিআইডি। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রদের জিম্মি করে নগ্ন ভিডিও করে রেখে দিতেন। এরপর সিআইডি তাকে আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা হত্যা মামলায় ৫ দিন রিমান্ড শেষে গত ৩০শে আগস্ট কারাগারে পাঠানো হয়েছে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে। এরর আগে তৌহিদ আফ্রিদিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অপর দিকে তার পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তৌহিদ আফ্রিদিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ২৫শে আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় তৌহিদ আফ্রিদিকে ৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন আদালতকে জানান, তৌহিদ আফ্রিদি আসাদুল হক হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তার বাবা মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীও এ হত্যা মামলার একজন আসামি। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই আগস্ট যখন আন্দোলন করছিলেন ছাত্র-জনতা, তখন তৌহিদ আফ্রিদি এই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেন। আন্দোলনের পক্ষে যারা ভিডিও বানাচ্ছিলেন, যারা বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছিলেন, তাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছিলেন এই তৌহিদ আফ্রিদি।
অবশ্য আসামিপক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন বলে আদালতের কাছে দাবি করা হয়। গত ২৪শে আগস্ট রাতে বরিশাল নগরের বাংলাবাজার এলাকার একটি বাড়িতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। রাতেই তাকে বরিশাল থেকে ঢাকায় আনা হয়।
সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন জানান, যাত্রাবাড়ী থানায় হওয়া হত্যা মামলাটির ১১ নম্বর আসামি তৌহিদ আফ্রিদি।
তৌহিদ আফ্রিদি বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের ছেলে। একই মামলায় নাসির উদ্দিনকে ১৭ই আগস্ট গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাকে গুলশান থেকে গ্রেপ্তারের পরদিন রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গত বছরের ১লা সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাটি হয়। এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসামি। তৌহিদ আফ্রিদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি করে তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পান। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভ্লগ ও ভ্রমণকেন্দ্রিক কনটেন্টের জন্য তার বড় অনুসারী গড়ে ওঠে।
খবরটি শেয়ার করুন