শুক্রবার, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** কলকাতায় পাঁচ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড *** নির্বাচনে সহায়তা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্রিফ করল জাতিসংঘ *** কাফু–ক্যানিজিয়ার সঙ্গে ঢাকায় নৈশভোজের সুযোগ *** নতুন গণমাধ্যম নীতি নিয়ে আপত্তি, পেন্টাগনের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক টাইমসের মামলা *** প্রধান উপদেষ্টাকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর ফোন, বন্যায় সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা *** খালেদা জিয়াকে নিয়ে নির্মিত সরকারি ডকুমেন্টারি প্রকাশ *** একটি মানবশিশুকে যেভাবে পাহারা দিলো চারটি কুকুর *** অনিবার্য কারণ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনি মাঠে থাকবে: নজরুল ইসলাম খান *** নিবন্ধন পাচ্ছে ‘আমজনতার দল’, প্রতীকের বিষয়ে যা জানা গেল *** এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হতে পারে, জুবাইদা রহমান ঢাকায় আসছেন

আবাসন খাতে স্থবিরতা কাটানোর পথ খুঁজে বের করতে হবে

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ১২:৩৩ অপরাহ্ন, ২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

#

ছবি- সংগৃহীত

প্রতিবছর দেশে প্রায় ২০ হাজার ফ্ল্যাট বেচাকেনা হতো। আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি।এখন বেচাকেনা নেই বললেই চলে। ফলে নির্মাণশিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৩৫ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। আবাসন ও নির্মাণ খাতে অচলাবস্থা থাকায় রড, সিমেন্ট, সিরামিকসহ অন্যান্য পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। ফলে সেসব খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বাড়ছে।

আবাসন খাত ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ফ্ল্যাট বিক্রি ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমে গেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজধানী ঢাকার ফ্ল্যাট বুকিং ও বিক্রি কমে গেছে। যাদের খুবই প্রয়োজন, তারাই শুধু কিনছে। আর যাদের নিজেদের ফ্ল্যাট আছে, তারা নতুন করে কিনছে না। উচ্চমূল্যের কারণে মধ্যবিত্তের জন্য ঢাকায় অ্যাপার্টমেন্ট কেনা আসলেই কঠিন হয়ে পড়েছে।

মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম এই খাতে এখন চরম স্থবিরতা চলছে। প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি বিক্রিতে মন্দা দেখা দিয়েছে। নতুন করে হচ্ছে না কোনো বিনিয়োগ। অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারছে না। অনেকে কোম্পানি খরচ মেটাতে না পেরে  লোকসান দিয়ে প্লট ও ফ্ল্যাট ছেড়ে দিচ্ছে।নানামুখী প্রতিবন্ধকতা শিল্পটিকে গ্রাস করছে। অথচ ২০২৩ অর্থবছরেও বাংলাদেশের জিডিপিতে এই খাতের প্রায় ৮ শতাংশ অবদান ছিল। ২০২৪ সালে এই খাতের বাজার ছিল পৌনে তিন ট্রিলিয়ন ডলারের।

বিগত কয়েক বছর ধরেই আবাসন খাত ব্যবসায়ীরা মানসম্মত জমির অভাব, নগর পরিকল্পনার অভাব এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাবের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আসছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের প্রভাব, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণের বাড়তি সুদ এবং নির্মাণসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মতো ঘটনা। এসব কারণে রাজধানীতে ছোট ও মাঝারি ফ্ল্যাট বুকিং ও বিক্রি এক বছরের ব্যবধানে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমেছে। বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। ফ্ল্যাট বুকিং ও বিক্রি কমে যাওয়ায় ছোট ও মাঝারি আবাসন খাতের উদ্যোক্তারা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। পাশাপাশি প্লট বা জমি বিক্রির পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।অন্যদিকে রড ও সিমেন্টের মতো কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি এবং নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ড্যাপ-এর কারণে ফ্ল্যাটের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে।যার কারণে  আবাসন খাতে নতুন প্রকল্পের সংখ্যা কমে গেছে। একই সঙ্গে ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ি নির্মাণের কাজেও স্থবিরতা চলছে।

দেশের ব্যবসায়ী, আমলা ও রাজনীতিবিদদের একটি অংশ সব সময় আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক ব্যবসায়ী, আমলা ও রাজনীতিবিদ আত্মগোপনে রয়েছেন এবং অনেকে ভীতিকর পরিস্থিতিতে আছেন। অন্যদিকে সরকার আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করেছে। ফলে এ খাতে বিনিয়োগও কমে গেছে। ফ্ল্যাট বিক্রি ও বুকিংয়ের পাশাপাশি প্লট বা জমি বিক্রির পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলে আবাসন খাতের ব্যবসা ভালো হয়। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সামগ্রিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে একধরনের স্থবিরতা চলছে। যার নেতিবাচক প্রভাব আবাসন খাতেও পড়েছে।

আই.কে.জে/                                           


আবাসন খাত

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250