শনিবার, ১৫ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ৬৮ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৬:০২ অপরাহ্ন, ৩রা মার্চ ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রোহিঙ্গা সংকট, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায় ও আশ্রয়দাতা স্থানীয় কমিউনিটি এবং মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৬৮ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে। বিশেষ করে, মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার মানুষের জন্য এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনার হাজা লাহবিব সোমবার (৩রা মার্চ) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি এই আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন।

সমতা, প্রস্তুতি ও সংকট ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ইইউর এই কমিশনার বলেন, ‘যদিও এই অর্থের পরিমাণ গত বছরের প্রাথমিক অনুদানের চেয়ে বেশি, তবুও এটি রোহিঙ্গা শিবিরে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি রোধ করার জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ, তহবিল ঘাটতি ক্রমশ বাড়ছে।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট মোকাবিলায় তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা।’ তিনি বলেন, ‘এটি বছরের পর বছর ধরে চলছে, কিন্তু এখনো কোনো সমাধান নেই। কখন সমাধান হবে, তার কোনো সময়সীমা নেই।’

অধ্যাপক ইউনূস ইইউর কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাকে বাংলাদেশে পেয়ে আমরা খুব আনন্দিত। জাতিসংঘের মহাসচিবও আসছেন। আমরা রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি।’

ইইউ কমিশনার বলেন, ‘এই সঙ্কটের একমাত্র সমাধান হলো শান্তি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সব ধরনের দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, যার মধ্যে মানবসৃষ্ট দুর্যোগও অন্তর্ভুক্ত। ভুল তথ্য (ডিসইনফরমেশন) ছড়ানোও দুর্যোগের মধ্যে পড়ে।’

ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তারা নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির সুযোগ, জ্বালানি সংযোগ, বন্যা ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য ইইউর সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে উত্তরণের পথ সুগম করবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কথা বলি আর এটিই সেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি। নেপাল ও ভুটান দুই দেশই আমাদের কাছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিক্রিতে আগ্রহী।’

ইইউ কমিশনার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার ওপর জোর দেন এবং বলেন, ইইউ বাংলাদেশকে ‘উত্তম অনুশীলন’ এবং প্রস্তুতির কৌশল বিনিময়ের জন্য আগ্রহী।

লাহবিব সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

ইইউ কমিশনার বলেন, ‘আপনি এক ব্যতিক্রমী সময়ে অসাধারণ কাজ করেছেন। আমার মূল বার্তা হলো, আমরা আপনাদের সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে প্রস্তুত রয়েছি।’

এইচ.এস/

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন