শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘সানভীস বাই তনি’শোরুম সিলগালা কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:০০ অপরাহ্ন, ২৭শে মে ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘সানভীস বাই তনি’র গুলশানের শোরুম বন্ধ করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন উচ্চ আদালত। 

সোমবার (২৭শে মে) তনির রিট পিটিশনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাই দোলনের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাণিজ্য সচিব, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ১০ দিন পর রুলের পরবর্তী শুনানি হবে। ততদিন শোরুম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

এর আগে গত ২১শে মে রিট পিটিশনটি দায়ের করেন তনির আইনজীবী সৈয়দ খালেকুজ্জামান অরুন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ ও আনিচ উল মাওয়া।

রোববার (২৬শে মে) প্রথম শুনানি হলে সময় চায় ভোক্তা অধিদপ্তর। তখন একদিনের সময় দিয়ে মঙ্গলবার আদেশের জন্য রাখেন আদালত। সোমবার (২৬শে মে) দুপুর ১২টার দিকে আদালত রুল জারি করেন।

এই বিষয়ে তনির আইনজীবী সৈয়দ খালেকুজ্জামান অরুন গণমাধ্যমকে বলেন,‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারি বিধি ও আইন দারা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। কিন্তু তারা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। তনির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা ৩০ দিনের সময়সীমা পার হওয়ার পর। সুতরাং এই অভিযোগ আমলযোগ্য না। রাজু নামে একজনকে অভিযোগকারী দেখিয়ে আরেকটা জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু রাজু নামে কেউ অভিযোগ করেনি। এরপরও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখেছে। বিষয়গুলো শোনার পর উচ্চ আদালত আজ এই আদেশ দিয়েছেন।’

আরো পড়ুন: ২০০ কোটি টাকা পাচার, তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দুদকের 

উল্লেখ্য, গত ১৩ই মে সানভীস বাই তনির পুলিশ প্লাজায় অবস্থিত প্রধান শাখায় অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল। পরের দিন অধিদপ্তরের দুটি অপরাধের দায়ে ৫০ হাজার ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। লুবনা ইয়াসমিন নামের এক নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইন্দ্রানী রায়। লুবনা ইয়াসমিন নামের ওই ক্রেতা সানভীস থেকে একটি পোশাক কিনেছিলেন ৯ই ফেব্রুয়ারি। এর ৫৩ দিন পর ৩রা এপ্রিল ওই নারী ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন। ফলে তার অভিযোগটি আমলযোগ্য নয় বলে মনে করেন তনির আইনজীবী সৈয়দ খালেকুজ্জামান অরুন।

অন্যদিকে, রাজু নামের এক ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তবে রাজু নামে আসলে কেউ অভিযোগ করেননি বলে দাবি করেছেন তনি। রাজু নামের কারো অভিযোগের জন্য তনিকে কোনো নোটিশ বা শুনানি করা হয়নি বলেও জানান তনি। এছাড়া লুবানার অভিযোগের শুনানি হয় ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক ইন্দ্রানী রায়ের অধীনে। অন্যদিকে জব্বার মণ্ডল ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক। ইন্দ্রানীর কাছে শুনানি থাকলেও একই সময় জব্বার মণ্ডল সেখানে গিয়ে ভুয়া অভিযোগে দুই লাখ জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা না দিলে অন্যান্য শোরুম বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেন বলে রিট পিটিশনে উল্লেখ করেছেন তনি।

এই বিষয়ে রোবাইয়াত ফাতিমা তনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে যেভাবে হোক তারা দুটি শাস্তি দিয়েছে। তারপরও আমার ব্যবসা বন্ধ রেখেছে। তারা আমাকে বলেছে, একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তাহলে তদন্তের আগেই আমাকে শাস্তি দেয়া হলো কেন? তাছাড়া, আমাকে যে জরিমানা করা হয়েছে তার আদেশের কপিও আমাকে দেওয়া হয়নি। শোরুম সিলগালা করার বিষয়েও কোনো নোটিশ বা আদেশের কাগজ আমাকে দেওয়া হয়নি।

এসব বিষয় নিয়ে সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এখন কিছু বলা যাবে না। তদন্ত শেষ হলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এইচআ/ 




হাইকোর্ট সানভীস বাই তনি

খবরটি শেয়ার করুন