ছবি: সংগৃহীত
সিলেট নগরীর শামীমাবাদ আবাসিক এলাকায় এক লন্ডন প্রবাসীর পাঁচতলা বাড়ি। নাম ‘মাতৃমহল হলিভিউ’। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বাড়িটি দখল করে নামকরণ করা হয়েছিল ‘হোয়াইট হাউস’। তখন ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতার দখলে ছিল।
গত ৫ই আগস্টের পর বাড়িটি থেকে ছাত্রলীগকে হটিয়ে নতুন করে দখল নেন ছাত্রদলের স্থানীয় নেতা। বাড়ির মালিক লন্ডন প্রবাসীর অভিযোগ পেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অভিযানে অবশেষে দখলমুক্ত হয়। এরপর ‘হোয়াইট হাউস’ নামের বাড়িটি ফিরে পায় আগের ‘মাতৃমহল হলিভিউ’ নাম।
গতকাল মঙ্গলবার (১লা জুলাই) রাতে এসএমপির মিডিয়া সেল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানায়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের আইনি সহায়তা ও দক্ষ তৎপরতার মাধ্যমে বাড়িটি দখলমুক্ত হওয়ায় মালিক ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে শামীমাবাদ এলাকায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন সভা হয়।
সিলেট নগরীর মাতৃমহল হলিভিউয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসএমপির পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম।
সভায় পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘ভোক্তভোগীরা আমাদের কাছে অভিযোগ করলে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করি। দেখা গেছে, অভিযুক্তরা জালিয়াতির মাধ্যমে বাসার হোল্ডিং নম্বর পরিবর্তন করে হোয়াইট হাউস নাম দিয়েছেন। আমরা সঠিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত মালিককে তাদের বাসা ফিরিয়ে দিয়েছি।’
সভায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, ভুক্তভোগী প্রবাসীর আত্মীয়-স্বজন, রাজনৈতিক নেতা, এসএমপির অন্যান্য কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বাড়িটির মালিক ব্রিটেন প্রবাসী আলম বেগ। তিনি ১৯৯৯ সালে ১৪ শতক জমি ক্রয় করেন এবং ২০০৪ সালে ৯ শতকের ওপর ৫ তলা ভবন। ভবনের ঠিকানা, শামীমাবাদ ৫ নম্বর রোডের ২১৫ নম্বর বাড়ি, হোল্ডিং নম্বর ৫৫৭। ২০১৮ সালে বাড়িটি দখল করেন ছাত্রলীগের নেতা তুষার আহমদ। তার সঙ্গে দখলে সহায়তা করেন যুবলীগের নেতা শামীম খান।
সস্ত্রীক ব্রিটেনে থাকা আলম বেগ বেঁচে থাকাকালে তার স্বপ্নের বাড়ি ফেরত পাননি। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০২২ সালে দুঃখ নিয়েই মারা যান তিনি ও তার স্ত্রী। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের রাজনৈতিক পালাবদলের পর বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেন সিলেট মহানগর ছাত্রদলের স্কুল বিষয়ক সম্পাদক এস এম ফাহিম।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ফিরে মালিকানা দাবি করলে আলম বেগের বড় ছেলে সোহেল বেগকে ফাহিম হত্যার হুমকি দেন। তখন তিনি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
গত ২রা জুন কোতোয়ালি থানায় সোহেল বেগ ছাত্রদলের নেতা ফাহিমসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
খবরটি শেয়ার করুন