শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৩রা কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝালকাঠির সুস্বাদু আমড়া দেশের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে বিদেশে

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৩১ অপরাহ্ন, ১লা অক্টোবর ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

ঝালকাঠির  ভীমরুলি, শতদশকাঠি, খেজুরা, আতাকাঠিসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে আমড়া চাষ হয়। ঝালকাঠির আমড়া অন্য জেলার তুলনায় মিষ্টি হওয়ায় চাহিদা দেশ-বিদেশের সর্বত্রই।

ঝালকাঠি শহরতলির কীর্তিপাশা মোড় থেকে প্রতিদিন দুটি যাত্রীবাহী বাসের বাংকারে অর্ধশতাধিক বস্তা আমড়া যাচ্ছে চট্টগ্রাম হয়ে নৌপথে বিদেশে। আমড়া পরিপক্ব হলে গাছ থেকে যত্নসহকারে সংগ্রহ করেন চাষিরা। এরপর বস্তা ভরে কখনো নৌপথে আবার কখনো সড়কপথে আমড়া নেওয়া হয় কীর্তিপাশা মোড়ে। 

পেয়ারার জন্য বিখ্যাত ঝালকাঠি এখন আমড়ার জন্য সুখ্যাতি অর্জন করেছে। ঝালকাঠি জেলার ২ শতাধিক গ্রামে আমড়া গাছ লাগিয়ে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন এলাকার চাষিরা। দেশের ভেতরসহ বঙ্গোপসাগর থেকে বড় বড় জাহাজে করে এখানকার আমড়া যাচ্ছে দেশের কয়েক জেলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে—এমনটাই দাবি আমড়া চাষিদের।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় এ বছর ৬০০ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ১২ টন আমড়ার ফলন পাওয়া গেছে। অর্থকরী ফসল হওয়ায় কৃষকরা আমড়া চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। প্রতি বছরই আমড়ার ফলন বাড়ছে।’

ঝালকাঠির কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ভীমরুলির আমড়া চাষি রিপন চৌধুরী ২০১৭ সালে ১০ কাঠা জমি লিজ নিয়ে আমড়া গাছ লাগান। তিনি বলেন, ‘৫০ মণের ওপরে আমড়া বিক্রি করেছি। শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন মাস আমড়ার ভরা মৌসুম। তাই ওই সময়ে দামও ভালো থাকে। কিছু গাছে সারাবছর আমড়া ধরে।’

তবে তিনি আফসোস করে বলেন, ‘কুড়িয়ানা, আটঘর, ভীমরুলি কিংবা ডুমুরিয়া, বেতরা—যেখানেই বলি না কেন বিপুল উৎপাদিত আমড়া সংগ্রহে এসব এলাকার ব্যবসায়ী-আড়তদার পর্যাপ্ত নয়। তৃণমূলে অর্থাৎ বাগান থেকে সংগ্রহ করা আমড়া প্রথমদিকে ৩০০-৩৫০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। এখন তা সাড়ে ৫০০ থেকে ১০০০-এর কাছাকাছি। আমড়া পেয়ারার মতো অতি দ্রুত পচনশীল নয়, বিধায় এটি চাষে ন্যূনতম লাভ হয়।’

আমড়া চাষের সমস্যার কথা জানিয়ে কৃষকেরা বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে এক ধরনের লেদাপোকা গাছের পাতা খেয়ে পাতাশূন্য করে ফেলে। এতে আমড়া চাষের ক্ষতি হয়। এ জন্য কৃষক-চাষি-বাগানিরা চান স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তা। কিন্তু অনেক সময় সাড়া পান না তেমন। তারা কীটনাশকমুক্ত আমড়া চাষাবাদে আগ্রহী।’

ভীমরুলিতে আড়ত আছে ছোট-বড় মিলিয়ে ডজনখানেক। সবাই মূলত পেয়ারা কেনেন। তবে পেয়ারার শেষ সময়ে শুরু হয় আমড়ার ভরা মৌসুম। সেজন্য আড়তদাররা থেকে যান আগের মতোই। চলে আমড়া বিকিকিনির হাঁকডাক। ডুমুরিয়া, বেতরা, বারুহারসহ ঝালকাঠির বেশিরভাগ গ্রাম পেয়ারার পাশাপাশি আমড়া চাষের জন্যও বিখ্যাত। বর্তমানে এসব আমড়া বিক্রি হচ্ছে আটঘর, পিরোজপুরের কুরিয়ানাসহ ঝালকাঠির ভীমরুলির ভাসমান বাজারে।

সবচেয়ে বড় ভাসমান বাজার ভীমরুলি। এখানকার জৌলুসই আলাদা। সকাল ৮টার মধ্যে বাজার বসে, বেচাকেনা চলে দুপুর পর্যন্ত। ছোট ডিঙিতে বা নৌকায় করে চাষি-বাগানিরা আসেন এখানে। আর ট্রাকে অথবা ট্রলারে করে আড়তদাররা তা কিনে নেন। পুরো আশ্বিন-কার্তিক মাসজুড়েই আমড়া বিক্রিতে এসব হাট জমজমাট থাকবে।

আরও পড়ুন: প্রবাস ফেরত সেলিম নার্সারি করে সফল

এসি/ আই.কে.জে/


আমড়া

খবরটি শেয়ার করুন