রবিবার, ১লা জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বারোমাসি তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে জয়পুরহাটের কৃষকদের

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:২৬ অপরাহ্ন, ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ভূতগাড়ীসহ কয়েকটি এলাকায় জনপ্রিয় হচ্ছে মালচিং পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ। তরমুজ চাষে আগ্রহও বাড়ছে এই জেলার কৃষকদের। পরিবেশবান্ধব এ পদ্ধতি ব্যবহার করে বিভিন্ন রঙের তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষকরা।

বছরে তিনবার বিভিন্ন রঙের তরমুজ চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন তারা। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও রসালো হওয়ায় চাহিদাও বেশি। ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ। এই তরমুজ চাষ করে বিক্রির জন্য কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। মাঠ থেকে রাস্তায় তুললেই বিক্রি হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ পদ্ধতিতে শীতকালের তিন মাস বাদে ৯ মাস তরমুজ উৎপাদন সম্ভব। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় অন্য ফসল বাদ দিয়ে তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। বিঘাপ্রতি ৬০-৬৫ হাজার টাকা খরচ করে বিক্রি হয় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। এতে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে।

জয়পুরহাটে প্রথম বারোমাসি তরমুজ চাষ শুরু করেছিলেন পাঁচবিবি উপজেলার ভাড়াহুত গ্রামের কৃষক আবু মুসা। ২০১৮ সালে সর্বপ্রথম মাত্র আড়াই শতক জমিতে মাচায় ব্ল্যাকবেবি ও মধুমালা তরমুজ চাষ শুরু করেন। যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩০০ বিঘায়।

সরেজমিনে জানা গেছে, বাঁশের তৈরি মাচার ওপর ঝুলছে গোল্ডেন ক্রাউন ও ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ। বীজতলা বা ক্ষেত থেকে সার ধুয়ে যায়। মালচিং পেপার দিয়ে মোড়ানো থাকায় এখানে সেই আশঙ্কাও নেই। সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে গাছগুলো দেড়গুণ তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে। গাছ থেকে যেন ফলগুলো ছিঁড়ে না পড়ে এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে নেট ব্যাগ।

ভাড়াহুত গ্রামের কয়েকজন চাষি গণমাধ্যমকে জানান, গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজের ওজন হয় ১ থেকে দেড় কেজির মধ্যে। ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ দেড় থেকে ৩ কেজি হয়। তাই মাচায় ঝুলে থাকা ফলগুলো নেটের ব্যাগেই বেঁধে রাখতে হয়। চারা রোপণের ৫০ দিনের মধ্যেই ফলন আসে এবং ফল পরিপক্ব হয়। স্থানীয় বাজারে প্রতিটি গোল্ডেন ক্রাউন, ব্ল্যাকবেবি ও মধুমালা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন: মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে মাছ চাষ করে লাভবান চাষি

তরমুজ চাষি কোরবান আলী ও আতোয়ার হোসেন বলেন, ‘ব্ল্যাকবেবি, মধুমালা, তৃপ্তি, ডায়না, সুগার কুইন তরমুজের চাহিদা অনেক বেশি। ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যান। ফলে বাজারজাত করা নিয়ে বাড়তি কষ্ট করতে হয় না। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে এলাকায় আরও বেশি তরমুজ চাষ হবে।’

ভূতগাড়ী রাস্তার পাশ থেকে তরমুজ কিনতে আসা ফরহাদ হোসেন ও তার বন্ধু মুরসালিন বলেন, ‘আমরা এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। দেখলাম অনেক সুন্দর সুন্দর তরমুজ। তাই ইচ্ছে হলো, আমরাও একটি করে কিনলাম। ৩৫ টাকা আর ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’

দিনাজপুরের হিলি থেকে আসা তরমুজ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বারোমাসি তরমুজের চাহিদা সব সময় বেশি থাকে। গত ৩ বছর ধরে আমি এখান থেকে পাঁচবিবি ও হিলিতে নিয়ে বিক্রি করি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) সাদিয়া সুলতানা  বলেন, জেলায় এবার ৪৫ হেক্টর জমিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ হচ্ছে। 

এসি/ আই.কে.জে/

তরমুজ চাষ কৃষক

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন