ছবি: সংগৃহীত
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে হলে জনগণের অভিপ্রায়ের ওপর নির্ভর করতে হবে। এটি যাচাই করার উপায় হলো গণভোট বা গণপরিষদ (সংবিধান সংস্কার সভা) নির্বাচন।
জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে গত শুক্রবার (২৬শে সেপ্টেম্বর) রাতে এক বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় অনলাইনে।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক সূত্র জানায়, আলোচনায় যে মতামত এসেছে তা হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে সংস্কার প্রশ্নে গণভোট করা যেতে পারে। জুলাই সনদ নিয়ে সংবিধান আদেশ জারি করে সেটার ভিত্তিতে গণভোট হতে পারে। আর গণপরিষদ বা সংবিধান সংস্কার সভা গঠন করা হলে সেটাও জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গেই করা যাবে।
সে ক্ষেত্রে আগামী সংসদ একই সঙ্গে গণপরিষদ বা সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়া জুলাই সনদ নিয়ে সংবিধান আদেশ জারি, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
এর আগেও সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছিল, জুলাই সনদ নিয়ে সংবিধান আদেশ জারি করা যেতে পারে। সেটা অবিলম্বে কার্যকর হবে। পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে এই আদেশ নিয়ে গণভোট করা যেতে পারে।
অবশ্য সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ছয়টি সংস্কার কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই পর্বের আলোচনায় ইতিমধ্যে ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। মূল বিতর্ক সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে।
বিএনপি আগামী সংসদের মাধ্যমে সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পক্ষে। এর বাইরে অন্য কোনোভাবে সংবিধান সংস্কার সম্ভব কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া যেতে পারে বলে মনে করে দলটি।
জামায়াতে ইসলামী চায় সংবিধান আদেশ জারি এবং গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন। আর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চায় গণপরিষদ। দলটি মনে করে, গণপরিষদ একই সঙ্গে নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করতে পারে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কোনো কোনো দল এ ধরনের সংবিধান সংস্কার সভা গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর বাইরে কিছু দল সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার পক্ষে।
সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তিন দিন আলোচনা হলেও এখনো ঐকমত্য হয়নি। আপাতত আলোচনা মুলতবি রয়েছে। আগামী ৪ঠা বা ৫ই অক্টোবর আবার আলোচনা হতে পারে।
খবরটি শেয়ার করুন