শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সাথে জোট গঠনে পিটিআইয়ের চুক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৪০ অপরাহ্ন, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান গহর আলী খান বলেছেন, কেন্দ্র এবং প্রদেশগুলোতে জোট গঠনে ধর্ম-ভিত্তিক রাজনৈতিক দল সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিতে পৌঁছেছে পিটিআই। 

এই চুক্তির বিষয়টি আজই পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন কমিশনে (ইসিপি) দাখিল করা হবে।

সোমবার (১৯শে ফেব্রুয়ারি) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান গহর আলী খান। 

তিনি বলেছেন, জাতীয় পরিষদে ৭০টি এবং সারা দেশে ২২৭টি সংরক্ষিত আসন রয়েছে। এসব আসন কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে বণ্টন করা হয়।

গহর খান বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সংরক্ষিত আসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সাথে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে পৌঁছেছি। এই চুক্তি অনুযায়ী, আমাদের দলের সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থীরা এসআইসিতে যোগদান করবেন। আমরা ইসিপির কাছে এই চুক্তির নথিপত্র উপস্থাপন করবো।

তিনি বলেন, দলের শক্তি ও আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত আসনের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আমরা ইসিপির কাছে আবেদন করবো। গহর খান বলেন, আমাদের দলের সমর্থিত প্রার্থী; যারা জাতীয় পরিষদ, খাইবার পাখতুনখোয়া ও পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে বিজয়ী হয়েছেন, তারা সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে যোগ দেবেন।

পিটিআইয়ের এই নেতা আরও বলেন, পিটিআইয়ের প্রার্থীরা আমাদের কাছে তাদের হলফনামা জমা দিয়েছেন এবং তাদের সম্মতিতে আজ আমরা ঘোষণা করছি যে, পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থীরা সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে যোগদান করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানের দলের মনোনীত প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ওমর আইয়ুব খানও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, তার দল দেশে ঐক্য চায়। যে কারণে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীরা কেন্দ্র ও সব প্রদেশে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ওমর আইয়ুব খান বলেন, সংরক্ষিত আসনের কোটা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নির্ধারিত থাকায় এই চুক্তি করা হয়েছে। সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সাথে জোট গড়া হলে জাতীয় পরিষদে পিটিআইয়ের শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে রাওয়ালপিন্ডির সাবেক নির্বাচন কমিশনার গত ৮ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট কারচুপির স্বীকারোক্তি দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ায় দেশটিতে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। 

এই বিষয়ে পিটিআইয়ের নেতা ওমর আইয়ুব বলেন, পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, করাচি এবং হায়দরাবাদেও পিটিআইয়ের ম্যান্ডেট চুরি করেছে এমকিউএম-পি। একই ধরনের ভোট জালিয়াতির ঘটনা পেশওয়ারেও ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন: এসআইসি’র সাথে জোটের সিদ্ধান্ত পিটিআইয়ের

সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে যোগ দেওয়ার পর পিটিআই সরকার গঠন করবে বলে জানিয়েছেন ওমর আইয়ুব। তিনি বলেন, আমাদের প্রথম কাজ হবে ইমরান খান, বুশরা বিবি, শাহ মাহমুদ কুরেশি, পারভেজ এলাহী ও আমাদের সব জ্যেষ্ঠ নেতাদের মুক্ত করা। ইমরান খান নেতৃত্বাধীন পিটিআইয়ের প্রতি সমর্থন জানানোয় তিনি দেশটির আরেক রাজনৈতিক দল মজলিশ ওয়াহদাত-ই-মুসলিমিনেরও প্রশংসা করেছেন।

গত ৮ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু দলটির নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করতে পারছে না। যে কারণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয় পাওয়া পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) কেন্দ্রে জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে পিপিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সাথে জোট গড়ার চেষ্টা করছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও দলই সরকার গঠনের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়নি।

নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৯টি ও বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৩টি আসনে জয় পেয়েছে। দেশটিতে কোনও দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ব্যাপক রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

সূত্র: ডন, জিও নিউজ

এসকে/ 

পিটিআই জোট গঠন

খবরটি শেয়ার করুন