ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (১৪ই ডিসেম্বর) রাতে জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্সের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ অভিযোগটি দায়ের করেন। এতে অভিযুক্ত অন্যরা হলেন মারিয়া কিশপট্ট এবং ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে ঘাপটি মেরে দেশে অবস্থান করে দেশের স্থিতিশীলতা ও অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র করে আসছেন।
বিবাদীরা ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশোতে বসে নিষিদ্ধ সংগঠনকে ফিরিয়ে আনার প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন। যার মাধ্যমে তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা করে আসছেন।
এতে আরো বলা হয়, বিবাদীদের এসব বিভিন্ন পোস্টের ফলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা অনুপ্রাণিত হয়ে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছেন।
এদিকে সাংবাদিক ও টকশো আলোচক আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রোববার। এদিন সন্ধ্যার পর তাকে ধানমণ্ডি এলাকার একটি ব্যায়ামাগার থেকে নিয়ে আসা হয়।
রাত ৯টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আনিস আলমগীরের নামে কোনো মামলা আছে কিনা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাকে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাকে গ্রেপ্তার করা হবে কিনা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পরই গ্রেপ্তারের বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আনিস আলমীগরকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে অনেকেই ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তাদের কেউ কেউ আনিস আলমীগের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি তাদের জানিয়েছেন, ডিবি প্রধান কথা বলবেন জানিয়ে তাকে ওই ব্যায়ামাগার থেকে গোয়েন্দার একটি টিম নিয়ে আসে।
আনিস আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ধানমন্ডি এলাকার একটি জিম (ব্যায়ামাগার) থেকে আমাকে নিয়ে আসা হয়। ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের প্রধান আমার সঙ্গে কথা বলবেন।’
রোববার রাতে সাড়ে ৮টার কিছুক্ষণ পরে আনিস আলমগীরের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ডিবি কার্যালয় থেকে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাকে ধানমন্ডি থেকে আনা হয়। আটটার দিকে তারা ডিবি কার্যালয়ে পৌঁছান। তখন থেকে অপেক্ষায় রয়েছেন। তার সঙ্গে তখন পর্যন্ত ডিবি প্রধানের কথা হয়নি।
ওই জিমের ম্যানেজার আরেফিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আনিস আলমগীর রোববার সন্ধ্যায় জিমে এসেছিলেন। ব্যায়াম করে পরে রাত ৮টার দিকে বের হয়ে যান। তবে জিমে তিনি পুলিশের কাউকে দেখেননি বলেও জানিয়েছেন।
কী কারণে আনিস আলমগীরকে হেফাজতে নিয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছুই জানায়নি ডিবি পুলিশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির এক কর্মকর্তা সুখবর ডটকমকে জানান, আনিস আলমগীরকে একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না রোববার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে জানান, সাংবাদিক আনিস আলমগীর ভাইকে ডিবি অফিসে নেওয়া হয়েছে। অন্য এক জায়গা থেকে খবরটা শুনে তাকে ফোন দিলাম। ফোনটা রিসিভ করেই তিনি শুধু বললেন- 'আমি ডিবি অফিসে'।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীর দৈনিক আজকের কাগজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে টেলিভিশন টকশোতে নানা বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি।
খবরটি শেয়ার করুন