সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অদূর ভবিষ্যতে কি তার নেতৃত্বে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরবে

আবারো আলোচনায় অং সান সুচি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৪৯ অপরাহ্ন, ৬ই আগস্ট ২০২৩

#

মিয়ানমারে রাজনৈতিক বিবর্তনে অং সান সুচি একজন রূপান্তরকামী নেত্রী ছিলেন। তার পিতা জেনারেল অং সান ছিলেন আধুনিক মিয়ানমারের জাতির জনক। যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা বলেই গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সাহসী এই নেত্রী মিয়ানমারের রাজনীতিতে “দ্য লেডি” নামে পরিচিত। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিতর্কিত অবস্থান ও ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণে তার রাজনৈতিক দীপ্তি অনেকাংশেই ম্লান হয়ে গেছে। তবে সবকিছুকে অতিক্রম করে আবারো দেশের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন সুচি।

গণতন্ত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) এর তরুণ প্রজন্ম এখনো বিশ্বাস করে যে, সুচির নেতৃত্বে দেশ এগিয়েছিল এবং সুচি হলো দেশটির জ্বলন্ত ইতিহাস। এছাড়া তার ৩৩ বছরের দন্ডের আংশিক ক্ষমা তাকে আবারো আন্তর্জাতিক মহলের সামনে নিয়ে এসেছে। এত কিছুর পরও কি কারণে অংসান সুচির গুরুত্ব? সে কি আসলেই সমস্যায় জর্জরিত মিয়ানমারের ভবিষ্যত বদলে দিতে পারবে? ২০২৩ সালের ৯ জুলাই থেকে ১লা আগস্ট  পর্যন্ত ঘটে যাওয়া চারটি ঘটনাতে পাওয়া যেতে পারে এসব প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর।

প্রথমত, গত ৯ জুলাই, ২০২৩ইং তারিখে দেশটির সামরিক সরকার থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডন প্রমুদুনাইকে অং সান সুচির সাথে কারাগারে দেখা করার অনুমতি দেয়। এসময় ডন প্রমুদুনাই এবং অং সান সুচির মধ্যে প্রায় দেড় ঘন্টার আলোচনা হয়। এই আলোচনার ব্যাপারটি এখনো তাদের দুইজন এবং মিলিটারি কর্তৃপক্ষের মধ্যেই রয়েছে। তবে জাকার্তায় আশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আলোচনায় ডন প্রমুদুনাই এ ব্যাপারে বলেন যে, অং সান সুচি সুস্থ আছেন। তিনি রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে সংলাপে বসার পক্ষপাতী। তবে ডন প্রমুদুনাই এবং অং সান সুচির বৈঠকের ব্যাপারে আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি অংশ তার সমালোচনা করেছেন এবং অপর অংশ বৈঠকটিকে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি বলে মনে করেছেন।

দ্বিতীয়ত, এ বৈঠকের পরপরই মিয়ানমারের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে অংসান সুচিকে কারাগার থেকে সরকারি বাংলোতে স্থানান্তর করে গৃহবন্দী করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে মিয়ানমারের সামরিক মুখোপাত্র কোন কিছু নিশ্চিত করেননি।

তৃতীয়ত, গত ৩১শে জুলাই মিয়ানমারের সামরিক সরকার চতুর্থবারের মতো জরুরি অবস্থা আরো ৬ মাস বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় যা দেশটির সংবিধানের লংঘন। এই ঘোষণায় দেশটির সামরিক সরকার দেশটিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি দিয়েছে মাত্র।

চতুর্থত, দেশটির সরকার ১লা আগস্ট ৭৭৪৯ বন্দীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। তাদের মধ্যে অংসান সুচি এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইউ উইন মিন্টের নামও রয়েছে। এই সাধারণ ক্ষমায় সুচির ৩৩ বছরের সাজা ৬ বছর এবং মিন্টের ১২ বছরের সাজা ৪ বছর কমানো হয়। উভয় নেতা তাদের সাজা ভোগ করতে থাকলেও সাজার মেয়াদ যে কমানো সম্ভব তা সুস্পষ্ট।

এই চারটি ঘটনাকে বৃহত্তর রাজনৈতিক ক্যানভাসে দেখলে এটাই সুস্পষ্ট হয় যে, মিয়ানমারে সামরিক সরকার ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। এছাড়া অদূর ভবিষ্যতে আবার যে অংসান সুচির নেতৃত্বে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরে আসছে তা সুস্পষ্ট।

অং সান সু চি সুচি মিয়ানমারে আলোচনায়

খবরটি শেয়ার করুন