ছবি: সংগৃহীত।
১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এবং সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে রয়েছে টানটান উত্তেজনা। ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান নির্বাচনে হেরে যেতে পারেন এবং কামাল কিরিকদারুগ্লুর অধীনে একটি নতুন সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কামাল কিরিকদারুগ্লু ছয়টি বিরোধী দলের নেতা। তিনি ক্ষমতায় আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো এবং ইসরায়েলের সাথে তুরস্কের সুসম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং সিরিয়া-লিবিয়ার সংঘাতের চিত্র পরিবর্তন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
দুইটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দ্বিতীয় পর্যায়েও যেতে পারে। কারণ রাষ্ট্রপতি এরদোগান এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেউই প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন না।
২০১৮ সালের নির্বাচনে সিএইচপি দলের প্রার্থী হিসেবে ছিলেন মুহাররেম ইনসে। গত মাসে, কিলিকদারুগ্লু ইনসের সাথে দেখা করে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ইনসে তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।
তবে বেশিরভাগ পশ্চিমা নেতারা নিঃসন্দেহে তুর্কি রাষ্ট্রের নেতৃত্বে এরদোগানের পরিবর্তে কম স্বৈরাচারী নেতাকে দেখতে পছন্দ করবেন।
কিলিকদারুগ্লু তুরস্কের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সিরিয়ার প্রতি তুরস্কের নীতির পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সিএইচপি পার্টি সিরিয়ায় এরদোগানের সামরিক অনুপ্রবেশ এবং বিশেষ করে কুর্দি ওয়াইপিজি বাহিনীর বিরুদ্ধে এর সামরিক অভিযানকে সমর্থন করেছে।
এরদোগানের মতো, সিএইচপি এবং তুর্কি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বিশ্বাস করে যে সিরিয়ার শরণার্থীদের তাদের দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। এরদোগান বারবার স্বেচ্ছায় এক মিলিয়ন সিরীয় শরণার্থীকে ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে কিলিকদারুগ্লু ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছরের মধ্যে সিরিয়ার শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তবে কিলিকদারুগ্লু লিবিয়ার সংঘাতের বিষয়ে তুরস্কের জড়িত থাকার অবসান ঘটাবেন কি না, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
গত ১৯ এপ্রিল একটি সমাবেশে বক্তৃতা প্রদানকালে এরদোগান তার সমর্থকদের বলেন যে, আমেরিকা থেকে ইউরোপ পর্যন্ত সমস্ত সাম্রাজ্যবাদীরা কিলিকদারুগ্লু এবং তার জোটের পক্ষে রয়েছে।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি জরিপে দেখা যায়, ৭২ শতাংশ তুর্কিরা যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্কের জন্য হুমকিস্বরূপ দেখেন। অন্যদিকে ৫৪ শতাংশ তুর্কিরা রাশিয়াকে হুমকিস্বরূপ দেখেন।
এরদোগান অভিযোগ জানান যে, ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পেছনে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা।
এরদোগান তুর্কিদের মনে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতি যে বিরূপ মনোভাব ঢুকিয়ে দিয়েছেন তা পরিবর্তন করা কিলিকদারুগ্লুর জন্য বেশ কঠিন হবে।
এরদোগানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র থেকে দূরে সরে যায় তুরস্ক। ফলে ইইউ থেকেও বাদ পড়ে যায় দেশটি। তুর্কিদের ইউরোপীয় পরিবারের সদস্য হওয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে কিলিকদারুগ্লুর জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি এবং এটাও বিশ্বাস করা হচ্ছে যে কিলিকদারুগ্লু জয়ী হলে তিনি তুরস্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবেন।
এমএইচডি/ আই. কে. জে/
আরো পড়ুন:
আগামী নির্বাচনে লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাইডেনের
খবরটি শেয়ার করুন