ছবি: সংগৃহীত
মেট্রোরেল প্রকল্পের এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাভারের হেমায়েতপুর থেকে রাজধানীর ভাটারা পর্যন্ত এ লাইন হবে ২০ কিলোমিটার।
শনিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীবাসীর দীর্ঘদিনের বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন তিনি। দুপুর আড়াইটায় এ অংশ উদ্বোধন করে মেট্রোরেলে চড়ে মতিঝিলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বিকেল সাড়ে ৩টার পর হেমায়েতপুর-ভাটারা অংশের নির্মাণকাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় উপস্থিত ছিলেন- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান এমপি ও জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, শেখ হেলাল এমপি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জাল হোসেন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিনুল্লাহ নুরী, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন এ সিদ্দিকসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
আরো পড়ুন: ৩০ মিনিটে মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে মতিঝিল, ভাড়া ১০০
এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) হেমায়েতপুর থেকে আমিনবাজার, গাবতলী, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, বনানী ও গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার হবে। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে।
এর আগে দুপুর আড়াইটায় আগারগাঁও স্টেশনের উদ্বোধনস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রথমে ট্রেনের স্বয়ংক্রিয় টিকিট (অস্থায়ী পাস কার্ড) নেন। এরপর কার্ড পাঞ্চ করে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনেরে লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। সেখানে পতাকা নেড়ে ট্রেন চলার সংকেত দেন। পরে মেট্রোরেলে চড়েই প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গীদের নিয়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
স্বপ্নের মেট্রোরেলে বসে সংবাদ মাধ্যমে অনুভূতি ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এতটুকু বলতে পারি, পথ হারায়নি বাংলাদেশ। আমরা একের পর এক বড় বড় স্বপ্ন পূরণ করছি। একটা উন্নত দেশ যা যা পেয়েছে, আমাদের দেশের মানুষও সবই পাবে। আমরা জাতিকে শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখন আমাদের স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি। এটাই আমার বড় আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে চলবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াবে, বিজয়ী জাতি হিসেবে সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবো।
তিনি বলেন, আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু) বাঙালি জাতির একটা উন্নত সমৃদ্ধ জীবন দেবেন বলেই এ দেশেকে স্বাধীন করেছেন। আমার একটাই প্রত্যয়, আমি বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। আমার আমিত্ব বলে কিছু নেই, আমি আমাকে উৎসর্গ করেছি এদেশের মানুষের কল্যাণে। মানুষ যখন শান্তি পাবে, তখন আমার বাবাও শান্তি পাবে, তিনি খুশি হবেন, তিনি নিশ্চয় সেটা দেখছেন।
আরো পড়ুন: ৩০ মিনিটে মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে মতিঝিল, ভাড়া ১০০
শেখ হাসিনা বলেন, আমি খুবই আনন্দিত। যারা এই কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। জাপান সরকারকেও ধন্যবাদ জানাই। তারাও এই কাজে সম্পৃক্ত ছিল। এই কাজে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তারা সবাই অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আমাদের এই কাজটা সফল করে দিয়েছেন। এটি উন্নত প্রযুক্তির ও পরিবেশবান্ধব। এর ফলে সময় বাঁচবে, যানজট কমবে।
একদিন পর আগামীকাল রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে মেট্রোরেলে চড়ে যাওয়া যাবে মতিঝিল স্টেশন পর্যন্ত। অর্থাৎ উদ্বোধনের পরদিনই আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ওইদিন থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলবে স্বপ্নের এ উড়াল ট্রেন।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন