সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খরচ কম লাভ বেশি, রাজবাড়ীতে করলা চাষে কৃষকের মুখে হাসি

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, ২৬শে অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

রাজবাড়ীতে কম খরচে অধিক লাভের সবজি হিসেবে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে করলা চাষাবাদ। করলা চাষ করে বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও চাষিদের নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষে দেওয়া হচ্ছে নানাবিধ পরামর্শ।

রাজবাড়ী জেলা সদরের সুলতানপুর ইউনিয়নের সবজি চাষি সুজাত মোল্লা (৪০)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। অনান্য ফসলের পাশাপাশি চলতি মৌসুমে তিনি নিজের ২৫ শতাংশ জমিতে করেছেন করলার চাষ। গত কয়েক মাসে তিনি ৯০ হাজার টাকার করলা বিক্রি করেছেন। আগামী কয়েক মাসে আরও ৪০ হাজার টাকার করলা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।

তার মতো এমন আরও অনেক চাষি জেলায় এ বছর করেছেন করলার চাষ। দেখেছেন লাভের মুখ। এতে তাদের দিন ফিরেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১৪৯ হেক্টর জমিতে করলার চাষ করেছেন চাষিরা। যাতে মোট উৎপাদন ২ হাজার ৩৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে জেলা সদরে ৪৫ হেক্টর, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৪০ হেক্টর, পাংশা উপজেলায় ৩০ হেক্টর, কালুখালী উপজেলায় ১৫ হেক্টর এবং গোয়ালন্দ উপজেলায় ১৯ হেক্টর জমিতে করলার আবাদ হয়েছে।

করলা চাষি সুজাত মোল্লা বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে ধান, গম, শাক সবজির চাষাবাদ করি। কৃষি কাজ করেই আমার জীবন জীবিকা চলে। এ বছর আমি গত মে মাসে নিজের ২৫ শতাংশ জমিতে উন্নতজাতের করলা চাষ করি। ৩০ দিন পরে ফলন আসে।

প্রথম দিকে স্থানীয় বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। বর্তমানে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। প্রতি সপ্তাহে ২ দিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ কেজি করলা বিক্রি করছি। এই পর্যন্ত ৯০ হাজার টাকার করলা বিক্রি করেছি। এই মৌসুমে আরো ৪০ হাজার টাকার করলা বিক্রি করবো বলে আশা করছি।

সুলতানপুর ইউনিয়নের আরেক চাষি নায়েব আলি বলেন, আমি ১৫ শতাংশ জমিতে চলতি মৌসুমে করলার চাষ করেছি। আল্লাহর রহমতে ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দামও পেয়েছি। আমার পরিবারের মুখে এখন খুশির হাসি।

আরেক চাষি আ. রাজ্জাক মোল্লা বলেন, চলতি বছরের মে মাসে করলার চাষ শুরু করি আমার নিজের ১৫ শতাংশ জমিতে। রোপণের ৩০ দিন পরেই ফলন আসে। আমি এই পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার বেশি করলা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছি। কম খরচে করলা চাষে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।

আরো পড়ুন: চম্পা কলা চাষে আনোয়ারের ৯ লাখ টাকা আয়!

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনজুর মোর্শেদ বলেন, আমার সুলতানপুর ইউনিয়নে প্রায় ৫০ কৃষক করলা চাষে সফলতা পেয়েছেন। কম খরচে অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভবান হয়েছেন চাষিরা। ফলনের শুরুর দিকে স্থানীয় বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে করলা।

দিন দিন করলা চাষে চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। হিসেব করে দেখা গেছে, হেক্টর প্রতি করলার উৎপাদন প্রায় ১০ টন। যা শতাংশ প্রতি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কেজি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জনি খান জানান, করলা একটি অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। করলার রস শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে। করলা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

করলা হজমপ্রক্রিয়ায় গতি বাড়ায়। আমরা নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে করলা চাষিদেরকে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। ক্ষতিকর পোকা দমনে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার শিখিয়েছি।

এসি/ আই.কে.জে




কৃষক করলা

খবরটি শেয়ার করুন