বৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কর্মক্ষেত্রে হয়রানির সবচেয়ে বেশি শিকার নারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:২৪ অপরাহ্ন, ২০শে জুন ২০২৩

#

প্রতীকী ছবি

ডায়ান প্রায় ছয় বছর ধরে কাজ করছেন নিউইয়র্কের একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে। প্রথম দুই বছর সবকিছু ঠিক থাকলেও পরবর্তীতে নতুন বসের আগমনে পালটে যায় সবকিছু। এশিয়ান-আমেরিকান ৩৭ বছর বয়সী ডায়ান বলেন, নতুন বস তাকে শুরু থেকেই পছন্দ করতেন না। তিনি তাকে এমন সব কাজ করতে বলতেন যা তার উপযুক্ত নয়। উপরন্তু তার সহকর্মীদের সামনে তাকে নিয়ে সমালোচনা করতেন তিনি এবং সবসময় তাকে নিচু দেখানোর চেষ্টা করতেন।

এক পর্যায়ে, তার বস তার খাবার দাবার থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়েই উপহাস করতে শুরু করেন। এখনও তিনি একই বসের জন্য কাজ করছেন যদিও পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে এখনও তিনি কর্মক্ষেত্রে অনিরাপদ বোধ করেন।

তবে তার বসের আচরণ সম্পর্কে তিনি কখনো উচ্চ পর্যায়ে অভিযোগ করেন নি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, অভিযোগ করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারতো, কারণ তার বস অফিসে সবার কাছেই সম্মানিত একজন ব্যক্তি। তাই তিনি কোনও ধরনের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নন।

বৈশ্বিক তথ্য অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে হয়রানির সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছেন নারী এবং সংখ্যালঘুরা। বার্ষিক ওমেন অ্যাট ওয়ার্ক রিপোর্ট থেকে ২০২৩ সালের পরিসংখ্যানে ১০ টি দেশের ৫০০০ মহিলাকে জিজ্ঞেস করা হলে তার মধ্যে ৪৪% মহিলাই কর্মক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে স্বীকার করেন।

তবে উদ্বেগের বিষয় হলো কর্মক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হওয়া অনেক মহিলাই এ বিষয়ে অভিযোগ করতে ভয় পান। মাত্র ৫৯% মহিলা তাদের উপর হওয়া হয়রানির ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন। তবে গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৬৬%। অর্থাৎ এ বছর এ সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।

আইনী, একাডেমিক এবং এইচআর ক্ষেত্র জুড়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, অভিযোগ করলেই যে নারীরা সুবিচার পাবেন তার নিশ্চয়তা না থাকার কারণেই তারা নতুন করে বিপদ বাড়াতে চাইছেন না। 

তাছাড়া অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও অস্থিতিশীল শ্রমবাজারের কারণেও অনেকে আর বিপত্তিতে জড়াতে চান না।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে হয়রানির বিরুদ্ধে অভিযোগ না করা সমস্যাটিকে আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাবে এবং কর্মক্ষেত্রকে মহিলাদের জন্য অনিরাপদ করে তুলবে।

গত তিন বছর ধরে, শ্রমবাজারে অগ্রসর হওয়া মহিলাদের জন্য ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময়কালীন এবং এর পরবর্তী সময় অর্থনৈতিক বাজারের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিল। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার ভয় মহিলাদের হয়রানির বিরুদ্ধে কথা বলা থেকে আরো বেশি নিরুৎসাহিত করছে।

উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক, ক্লো গ্রেস হার্টের ২০১৯ সালের একটি গবেষণাপত্রে দেখা যায় যে, চাকরির অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মহিলারা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে পর্যন্ত চুপ করে থাকতে বাধ্য হন।

সূত্র: বিবিসি

আই. কে. জে/

Important Urgent

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন