ফাইল ছবি
কূটনৈতিক টানাপোড়েন অবসানে ভারতের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বসতে চায় কানাডা। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (৩অক্টোবর) কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এ কথা বলেছেন। কানাডায় শিখ সম্প্রদায়ের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের জেরে এই টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়।
এমন সময় কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আলোচনার কথা বললেন, যখন দেশটির ভারতীয় মিশন থেকে ৪১ কর্মীকে সরিয়ে নিতে বলেছে নয়াদিল্লি। ১০ অক্টোবরের মধ্যে তাঁদের সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
তবে কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার এ খবরের যথার্থতা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কিংবা জোলি কেউই। ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এ খবর প্রকাশ করেছে।
সাংবাদিকদের কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত সরকারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। কানাডার কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমরা গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করে যাব। কারণ, কূটনৈতিক আলাপ গোপন থাকাটাই সবচেয়ে ভালো বলে আমরা মনে করি।’
ভারতের পাঞ্জাবকে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র করার দাবিতে গড়ে ওঠা খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং। ভারত সরকারের চোখে তিনি একজন ‘সন্ত্রাসী’ ও ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’। গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারে এলাকায় গুরুদুয়ারার বাইরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি নিহত হন।
সম্প্রতি ট্রুডো কানাডার পার্লামেন্টে এক বিতর্কে অংশ নিয়ে বলেন, হরদীপ হত্যাকাণ্ডে ভারতের এজেন্টদের জড়িত থাকার বিষয়ে কানাডার জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ রয়েছে।
তবে ভারত সরকার কানাডার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, অটোয়ার এ বক্তব্য ‘অবাস্তব ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। তারা বলেছে, হরদীপ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কানাডা সরকার তাদের দাবির বিষয়ে এখনো ভারতের কাছে কোনো প্রমাণ হাজির করেনি।
এ নিয়ে কানাডার সঙ্গে কূটনৈতিক লড়াইয়ে নেমেছে ভারত। পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক বহিষ্কার, ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা, বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে দুই দেশ।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে কানাডার ৬২ জন কূটনীতিক রয়েছেন। তাঁদের ৪১ জনকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাঁদের কূটনৈতিক সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করে নেওয়ার হুমকি দেয় নয়াদিল্লি। এ ছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর কানাডার নাগরিকদের নতুন করে ভিসা প্রদান স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় ভারত।
একে/